রাজশাহী প্রতিনিধি,২৯ জুন ২০২১:
রাজশাহীতে দেড় মাস বয়সী এক শিশু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে জায়গা না পেয়ে শিশুটির মা শেষ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। তবে শিশুদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা না থাকায়- নিজে আক্রান্ত না হয়েও শনিবার থেকে সন্তানকে নিয়ে রামেকের কোভিড ইউনিটে থাকছেন এই মা।
রাজশাহী শহরের ছোট বনগ্রাম এলাকার আরিফুর রহমানের স্ত্রী মাহবুবা খাতুন জানান, মেয়ে আফরিনের জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করতে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে। ২০ জুন র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তার মেয়ের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এরপর মেয়েকে নিয়ে প্রথমে রাজশাহী রয়েল হাসপাতাল ও রাজশাহী খ্রিস্টান মিশন হাসপাতাল নামে দুটি বেসরকারি হাসপাতালে যান তিনি। তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে জায়গা হয়নি আফরিনের।
শেষ পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হন মাহবুবা। তবে সেখানে করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্যে আলাদা কোনো ব্যবস্থা না থাকায়, অন্য রোগীদের সঙ্গেই রাখা হয়েছে আফরিনকে। তার দেখাশোনা করার জন্য আক্রান্ত না হয়েও ঝুঁকি নিয়ে করোনা ইউনিটে থাকছেন মাহবুবা।
মাহবুবা খাতুনের স্বামী আরিফুর রহমানও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একটি নকল কেএন-৯৫ মাস্ক পরে কোভিড ইউনিটের মেঝেতে বসে আছেন মাহবুবা। মেয়ে আফরিন তার কোলে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। মা-মেয়ের চারপাশেই চলছে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা।
মাহবুবা খাতুন বলেন, ও আমার বাচ্চা। আমি তো একা ছেড়ে যেতে পারি না। এখন কোভিড রোগীদের সঙ্গে থেকে আমি আক্রান্ত হলে কে দায় নেবে?
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানি বলেন, শিশুদের জন্য হাসপাতালে আলাদা ব্যবস্থা করা হয়নি। কারণ শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ খুব বিরল। সংক্রমিত শিশু তেমন একটা দেখতে পাই না আমরা। গত মে মাসে একটি শিশু করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, আফরিনকে কোভিড ইউনিটে ভর্তি করা হলেও শিশু বিশেষজ্ঞরাই তাকে দেখছেন। শিশুটির মাকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য শিশু ও তার মায়ের নমুনা নেয়া হয়েছে।