দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৮ জুলাই, ২০২০

বই খাতা, কলম কিংবা চক-ডাস্টার নয় শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের উপকরণ হবে মোবাইল বা ট্যাবে ও ডিজিটাল অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি করা সফটওয়্যার। তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান শুরু হয়েছে। বিটিসিএল পরিচালিত ৮টি টিএন্ডটি স্কুলে প্রাথমিকভাবে প্রি-স্কুল থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান শুরু হয়েছে। এ পদ্ধতিতে মোবাইল বা ট্যাবে ডিজিটাল অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তৈরি করা সফটওয়্যারে নির্ধারিত পাঠ্যসূচি অনুসারে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো হবে। এর ফলে খেলার ছলে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে সহজে এবং আগ্রহের সাথে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারবে।

আজ বুধবার (৮ জুলাই) দেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানের প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিটিসিএল, হুয়ায়ুয়ে এবং বিজয় ডিজিটালের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকার বনানীতে টিএন্ডটি বয়েজ হাইস্কুলে কার্যক্রমটি শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দুই বছরের মধ্যে টিন্ডটির আরও ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৯৭০ জন ছাত্র-ছাত্রী ডিজিটাল শিক্ষার আওতায় আসবে। বিটিসিএল এর ব্রিজিং দ্য ডিজিটাল এডুকেশন ডিভাইড টু রিডিউস দ্যা গ্যাপ প্রকল্প এই কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করছে।

জানা গেছে, জাতীয় পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে উদ্ভাবিত সফটওয়্যার শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করবে বিজয় ডিজিটাল অ্যাপ। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে হুয়ায়ুয়ে ট্যাব সরবরাহ করবে। সরবরাহকৃত ট্যাবে বিজয় ডিজিটাল অ্যাপটি আগে থেকেই ইনস্টল করা থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা তাদের পড়ালেখা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তারের সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিবন্ধকতা হলো ডিভাইস এবং কনটেন্ট। গত ১১ বছরে বিজয় ডিজিটালের সিইও জেসমিন জুই কনটেন্ট বিষয়ক চ্যালেঞ্জটি তার ২০ জন দক্ষ সহযোদ্ধাকে নিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে মোকাবেলা করেছেন। প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তকের কনটেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের হাতে তিনি তুলে দিতে পেরেছেন। বিনা টাকায় করোনাকালে শিক্ষার্থীরা এই কনটেন্টটি এখন পাচ্ছেন। অনলাইন থেকে শিক্ষক ও অভিভাবকরা ডাউনলোড করে তাদের সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা জীবনে প্রাথমিক স্তরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর আগামী দিনটা হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তির দিন। এই পদ্ধতিতে শিশুদের কম্পিউটার শিক্ষার কাজটিও যেমন এগিয়ে যাচ্ছে পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহও তেমনি বাড়ছে। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শুরু হয়ে গেছে। বিপ্লবের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে না পারলে নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হবে। প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতি বিদ্যমান শিল্পযুগের উপযোগী মানব সম্পদ তৈরি করতে পারবে না। ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতিই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে টিকে থাকার একমাত্র পথ।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. নূর-উর-রহমান, বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিন, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর হেড অব অফিস বিয়্যাট্রিস কালদ্রুন, বিজয় ডিজিটালের প্রধান নির্বাহী জেসমিন জুই, হুয়ায়ুয়ে টেকনোলজিস বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ঝাং ঝেংজুন, বনানীর টিএন্ডটি বয়েজ হাইস্কুলের অধ্যক্ষ হালিমা বেগম অংশগ্রহণ করেন।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।