চাঁদপুরের হাইমচরে দুই শিক্ষক ও এক অভিভাবককে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা।
রোববার (৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায় উপজেলার আলগী দক্ষিণ ইউয়িনের নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়ম এবং গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করায় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ও অভিভাবক নাছির উদ্দিন জেলা প্রশাসক কার্যালয় অভিযোগ করেন। বুধবার (৩ এপ্রিল) অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কামাল বিদ্যালয়ে তদন্তের গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে হট্টগোল হয়। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত সভাপতি এস এম আল মামুন ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারুকুল ইসলামসহ কয়েকজন সহকারী শিক্ষক মাহবুব আলম, আলী আকবর ও অভিভাবক নাছির উদ্দিনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে আহত শিক্ষক আলী আকবর বাদী হয়ে হাইমচর থানায় মামলা করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান রাত্রী, সুরভী বাঁধন ও মিতু বলে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আচরণ ভালো নয়। তিনি আসার পর থেকে বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সব কর্মকাণ্ড বন্ধ। তার অনিয়মের প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদের ওপর হামলা করেন। আমরা এর বিচার চাই।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী নুরুল কাদের মানিক বলেন, আমরা এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে চাই। নিয়মের মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হোক।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও হামলার শিকার নাছির উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি হচ্ছে। গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ৭-৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। বিষয়টি জানাজানির পরে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
মামলার বাদী শিক্ষক আলী আকবর বলেন, আমি অসুস্থ। যে কারণে মানববন্ধনে যেতে পারিনি। তবে আমাদের সহকর্মী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেছেন। আমি হামলাকারীদের বিচার চাই।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিষয়ে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। যেহেতু মামলা হয়েছে, মামলাই তা প্রমাণ হবে। কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এ ঘটনা সাজিয়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এস এম আল মামুন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। মূলত ঘটনার দিন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।