দুই যুগ পর ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবল ভারত

Image

পরতে পরতে রোমাঞ্চ সাজিয়ে বসেছিল মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে। ভারত খাদের কিনারে চলে গিয়েছিল মাত্র ২৯ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে। তবে ঋষভ পান্তের ব্যাটের তালে সেই পেন্ডুলাম দুলছিল দুই দিকে।

মনে হচ্ছিল, এই ভারত, না আবারও নিয়ন্ত্রণ সফরকারী নিউজিল্যান্ডের হাতে। তবে পান্তের লড়াই থামিয়ে কিউইরাই তুলে নিল জয়। দুই যুগ পর নিজেদের দুর্গে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো ভারত।

ভারত ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে সবশেষ ধবলধোলাই হয়েছিল ২০০০ সালে। সেবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হেরেছিল ভারত। এর দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবার ঘরের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হলো স্বাগতিকরা। প্রথম দল হিসেবে ভারতকে তিন ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই করার ইতিহাস গড়েছে নিউজিল্যান্ড।

নিউজিল্যান্ডকে এমন ঐতিহাসিক জয় এনে দেওয়ার পথে দলের হয়ে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন স্পিনার অ্যাজাজ প্যাটেল। কিউই এই স্পিনার প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি নিয়েছেন ৬ উইকেট। এতে দারুণ এক মাইলফলকও গড়েছেন প্যাটেল। নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় স্পিনার হিসেবে একই টেস্টের দুই ইনিংসে ফাইফার নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন এই স্পিনার। এর আগে এই কীর্তি ছিল কেবল ড্যানিয়েল ভেট্টোরি ও মিচেল স্যান্টনারের।

নিউজিল্যান্ডকে এমন ঐতিহাসিক জয় এনে দেওয়ার পথে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটিই নিয়েছেন প্যাটেল। ভারতকে হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ হারানোর পথে কিউইদের একমাত্র বাধা হয়ে ছিলেন রিশব পন্ত। দ্রুত ৫ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে জাদেজাকে নিয়ে জুটি গড়ে দলের রান বাড়াচ্ছিলেন পন্ত। তবে জাদেজা ৬ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৪২ রানের জুটি।

তবে জাদেজা ফিরলেও এগোচ্ছিলেন পন্ত, তিনি নিজের ব্যক্তিগত ফিফটি পেরিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরের সঙ্গেও গড়েছিলেন ৩৫ রানের এক জুটি। এক পর্যায়ে ভারতের জয়ের আশাও জাগিয়েছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তবে দলীয় ১০৬ রানে পন্ত প্যাতেলের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে সাজঘরে ফিরেন। এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ওয়াশিংটন সুন্দররাও দলের হাল ধরতে না পারায় ২৫ রানের জয় পায় নিউজিল্যান্ড।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ১৪৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাত করতে নেমে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়েছিল ভারত। প্রায় দেড়শ রানের লক্ষ্যই যে স্বাগতিকদের পরীক্ষার মুখে ফেলবে তা ধারণা করা হয়েছিল আগেই, হয়েছেও তাই। ভারতের দলীয় ২৯ রানেই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছে কিউইরা, তাতে ভারতের সামনে এখন হোয়াইটওয়াশ হওয়ার শঙ্কা, আর দ্রুত ৫ উইকেট তুলে নিয়ে ১৪ বছর আগের এক স্মৃতি ফিরিয়েছে সফরকারীরা। ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টেই ইনিংসের প্রথম ৬১ বলের মধ্যেই নিজেদের প্রথম ৫ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। চলতি শতাব্দীতে এটিই ছিল ভারতের দ্রুততম সময়ে ৫ উইকেট হারানোর রেকর্ড।

তবে আজ ১৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাঁর চেয়েও কম সময়ে নিজেদের প্রথম ৫ উইকেট হারিয়েছে ভারত, ৪১ বলের মধ্যে সাইজঘরে ফিরেছেন দুই ওপেনারসহ বিরাট কোহলি, শুবমান গিল ও সরফরাজ খান।

ভারতের উইকেট হারানোর শুরুটা হয় রোহিত শর্মাকে দিয়ে, তিনি দলীয় ১৩ রানেই ম্যাট হেনরির বলে গ্লেন ফিলিস্পের মুঠোবন্দী হয়ে সাজঘরে ফিরেন। এরপর স্কোরবোর্ডে ৩ রান যোগ হতেই আউট হন শুবমান গিলও।

দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর হাল ধরতে পারেননি বিরাট কোহলিও, ১ রান করে অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে মিচেলের হাতে ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। এরপর যশ্বসী জয়সোয়াল ও সরফরাজ খান আউট হন ২ বলের ব্যবধানে।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।