দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে শিক্ষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক.১৪মে:
আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। ৯ বছর বন্ধ থাকার পর এমপিওভুক্ত (বেতনের সরকারি অংশ পাওয়া) হচ্ছে দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। বাজেটে অপ্রতুল বরাদ্দের কারণে নতুন করে এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। আগামী অর্থবছরে এ খাতে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হতে পারে।



আরো পড়ুন
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনে নতুন জটিলতা
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে তা নির্ধারণ করা হয়নি। তবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে এমপিওভুক্ত করা সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে তিন অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিও’র আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সূত্র জানিয়েছে, গত ৯ বছরে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপিত হয়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে এমপিওভুক্তির আবেদন নেওয়া শুরু করে সরকার। অনলাইনে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার আবেদন জমা পড়ে। ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৭৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তির জন্য যোগ্য বিবেচনা করেছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন স্কুল ও কলেজ এক হাজার ৬২৯টি, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অধীন মাদ্রাসা ৫৫১টি এবং কারিগরি প্রতিষ্ঠান ৫৮২টি।

অর্থ বিভাগের হিসাব অনুসারে এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হলে সরকারের বাড়তি খরচ হবে ১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ জন্য অর্থ বরাদ্দও চেয়েছে। ফলে আগামী অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ খাতে এক হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে।

এমপিওভুক্তির জন্য প্রাথমিকভাবে ৩৩২টি স্কুল এবং ২৯৯টি কলেজের একটি তালিকা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে স্কুলের জন্য আগামী বাজেটে ২৪২ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হতে পারে। কলেজের জন্য রাখা হতে পারে ৬২৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া মাদ্রাসার জন্য বাকি অর্থ বরাদ্দ রাখা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, যেসব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মাসে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারি অংশ (মূল বেতন ও কিছু ভাতা) দেওয়া হয়, সেগুলোকে এমপিওভুক্ত বলা হয়। আর যেগুলো এমপিওভুক্ত নয়, সেগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না।

জানা গেছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে ৫৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এটি মোট বরাদ্দের ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১২ দশমিক ৬ শতাংশ। অবশ্য চলতি বাজেটে শিক্ষায় এ বরাদ্দ জিডিপির অনুপাতে ২ দশমিক ০৯ শতাংশ, যা আগের বছরের সমান।

সারাদেশে বর্তমানে ২৬ হাজার ১৮০টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত। এর মধ্যে স্কুল ১৬ হাজার ১৯৭টি, কলেজ ২ হাজার ৩৬৫টি, মাদ্রাসা ৭ হাজার ৬১৮টি। এ খাতে সরকারের ব্যয় বরাদ্দ আছে বছরে ১৪ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। এ ব্যয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাজেটের ৬৩ শতাংশের বেশি।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।