ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহাদাৎ হোসেনের দুই ছাত্রী উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ২৭ জুন ড. শান্তনুর বিরুদ্ধে বিভাগের চেয়াম্যানের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন এক ছাত্রী। উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দিতে চাইলে ওই শিক্ষক নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপাচার্য বরাবর লিখিত (জমা দেয়া হয়নি) অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে ২০১৪-১৫ সেশনে এমফিল কোর্সে ভর্তি হন ওই ছাত্রী। ড. শান্তনু মজুমদার তার গবেষণা সুপাভাইজার। শুরু থেকেই তিনি ওই ছাত্রীকে ব্যক্তিগত এবং যৌনজীবন নিয়ে খোলামেলা হওয়ার পরামর্শ দিতেন।
একাডেমিক কাজে তার সাথে সাক্ষাৎ করলে, তিনি ওই বিবাহিত ছাত্রীর যৌনজীবন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতেন। এ নিয়ে প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থায় পড়তেন ওই ছাত্রী।
গত ১ জুন ড. শান্তনু মজুমদার ছাত্রীকে ব্যক্তিগত কক্ষে নিয়ে অশ্লীল-আপত্তিকর-বিব্রতকর কথাবার্তা বলেন। বিষয়টি নিয়ে ওই ছাত্রী পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার পর তাদের পরামর্শে গত ২০ জুন উপাচার্য বরাবর অভিযোগ লিখেন।
বিভাগের চেয়ারম্যানকে দেয়া লিখিত অভিযোগে ওই ছাত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমি আপনাকে আগেই অবহিত করেছিলাম। ড. শান্তনু মজুমদার আমার ও আমার স্বামীর কাছে করজোরে ও অশ্রুসজল চোখে ক্ষমা ভিক্ষা চায়, যখন উনি জানতে পারেন আমি ভিসি ও ডিন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিতে চাইছিলাম। পরে আমরা তাকে ক্ষমা করে দিলেও এ বিষয়ে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য আমার কাছে আসছে, যা চরম হতাশাজনক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী বলেন, ওই ছাত্রী নিরাপত্তাহীনতার কথা অবহিত করে অভিযোগ দিয়েছে। ৩০ জুন তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ বিষয়ে নতুন চেয়ারম্যান ব্যবস্থা নেবেন।
তবে অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ড. শান্তনু মজুমদার। তিনি বলেন, শুনেছি আমার বিরুদ্ধে অশালীন ব্যবহার ও নিরাপত্তার হয়রানির অভিযোগ আনছে। এটি ভিত্তিহীন। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।
অপরদিকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাদাৎ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন ওই বিভাগের দুই ছাত্রী। গত সোমবার (২৬ জুন) উপাচার্য ও বিভাগের চেয়াম্যানের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মো. সাহাদাৎ হোসেনও অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষাবার্তাকে বলেন, শুনেছি প্রাক্তন দুই ছাত্রী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। আমি নির্দোষ। আমার কোন দোষ নাই। ওরা পাস করে চলে গেছে। কি করণে কাদের প্ররোচনায় অভিযোগ আনছে জানি না।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিষয়টা শুনেছি। এখনো লিখিত পাইনি। লিখিত পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিষয়টা লিখিত পেয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক এ এম আমজাদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই, এটা শিক্ষকের বিরুদ্ধে তো, এটা প্রথমে ডিপার্টমেন্টে দিবে পরে যদি দিয়ে থাকে ভিসি স্যারের কাছে দিতে পারে