মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের দায়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা অনাদায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল বিচারক হাছিনা রৌশন জাহান এই কারাদণ্ডাদেশ দেন।
কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন প্রধান আসামি সদর উপজেলার খাবাসপুর গ্রামের মো. সিকান্দার শিকদার (৩৫) এবং তাঁর সহযোগী একই গ্রামের মো. বাবুল শিকদার (৩৬) ও মো. মোসলেম মোল্লা (৩৫)। রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন তাঁরা।
মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানান, ২০০৫ সালের ১৯ নভেম্বর নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়তে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়। এ সময় বাবুল ও মোসলেমের সহযোগিতায় তাকে ট্রলারে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় সিকান্দার।
স্থানীয় বালিরটেক বাজারের পূর্বপাশের কালীগঙ্গা নদী দিয়ে ট্রলারে যাওয়ার পথেই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সিকান্দার। এরপর এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৭/৯(১) ও ৭/৩০ ধারায় সিকান্দারকে প্রধান এবং বাবুল ও মোসলেমকে সহযোগী আসামি করে সদর থানায় মামলা করে ওই স্কুলশিক্ষার্থী। পরের বছরের ১ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার হয়ে ২৭ দিন পর জামিনে ছাড়া পান সিকান্দার। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর বিভিন্ন কার্যদিবসে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
আজ রায় ঘোষণার ধার্য দিনে প্রধান আসামি সিকান্দারকে একটি ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ছয় হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। আরেকটি ধারায় তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
অপহরণ ও ধর্ষণে সহযোগিতা করায় বাবুল ও মোসলেমকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ছয় হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে সিকান্দারের সাজা থেকে প্রথম হাজতবাসের ২৭ দিন বাদ যাবে। সব আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দিয়েছেন মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের ওই বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি এ কে এম নুরুল হুদা রুবেল ও আসামির পক্ষে মো. দেলোয়ার আলম খান মামলাটি পরিচালনা করেন।