নিজস্ব প্রতিবেদক,২৯ সেপ্টেম্বরঃ
সরকারি হওয়ার দিন থেকেই চাকরিকাল গণনা ধরেই টাইম স্কেল দেওয়ার চূড়ান্ত নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ফলে চাকরির শুরু থেকে পঞ্চাশ শতাংশ চাকরিকাল হিসেবে কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না নব্য জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর যারা ৫০ শতাংশ চাকরিকাল ধরে টাইম স্কেল নিয়েছেন তাদের অতিরিক্ত টাকাও ফেরত দিতে হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় গত ২৪ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত পত্র প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে পাঠানো চিঠি হিসাব মহাপরিদর্শকের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের সময় তিন দফায় ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়। প্রথম দফায় ২০১৩ সালে এবং আরও দুই ধাপে ২০১৪ সালের মধ্যে জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আত্তীকৃত প্রাথমিক শিক্ষকরা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরির শুরুর সময় থেকে চাকরিকাল অর্ধেক গণনা করে টাইম স্কেল-সিলেকশন গ্রেড দাবি করে আসছিলেন।
২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেল অনুযায়ী চাকরির ১০ বছরে এবং পরবর্তী ৮ বছরের উচ্চতর গ্রেড নির্ধারণ করে সরকার। সেই হিসেবে জাতীয়করণের পর থেকে কোনও শিক্ষকের ১০ বছর পূর্ণ হয়নি। ফলে চাকরির শুরু থেকে চাকরিকাল গণনা না করলে সিলেকশন গ্রেড পাবেন না কোনও শিক্ষক। এই কারণে জাতীয়করণের আগে চাকরির শুরু সময় থেকে চাকরিকাল গণনা করে টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড দাবি করেন শিক্ষকরা। এই দাবিতে উচ্চ আদালতে অনেকগুলো মামলাও করেছেন তারা। মামলাগুলো চলমান রয়েছে।
অর্থ বিভাগের উপ-সচিব রওনক আফরোজা সুমা স্বাক্ষরিত গত ২৪ সেপ্টেম্বরের চিঠিতে জানানো হয়, জাতীয়করণ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জাতীয়করণের আগের চাকরিকাল গণনা করে টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড প্রদানের কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। অর্থ বিভাগের ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর ১৫৫ নম্বর স্মারকের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ আলোচ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক নয়। ফলে এ সংক্রান্ত পত্রালাপে আরও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা ছিল। অর্থ বিভাগের জারি করা গত ১২ আগস্টের সিদ্ধান্ত সঠিক আছে। বিধায় সেই অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
অর্থ বিভাগের গত ১২ আগস্টের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয়করণ করা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক (চাকরির শর্তাদি নির্ধারণ) বিধিমালা, ২০১৩ -এর বিধি ২(গ) উল্লেখিত ‘কার্যকর চাকরিকাল’ একই বিধিমালার বিধি ১০-এ উল্লিখিত শুধু পেনশন গণনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অর্থ বিভাগের সম্মতি গ্রহণ না করে উল্লিখিত বিধিমালার ২(গ), ৯ এবং ১০ এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৪ সালের ৫ জুন জারি করা পরিপত্রের টাইম স্কেল গণনা সংক্রান্ত ৩.০১ অনুচ্ছেদ বিধিসম্মত নয়। বিধায় এ সংক্রান্ত মঞ্জুর আদেশ সংশোধনপূর্বক অতিরিক্ত প্রদানকৃত অর্থ কর্মচারীদের কাছ থেকে আদায়যোগ্য।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, উল্লিখিত বিষয়ে আর্থিক সংশ্লেষ ছিল বিধায় অর্থ বিভাগের সম্মতি ছাড়া হিসাবরক্ষণ অফিসগুলো টাইম স্কেল প্রদান সংক্রান্ত বিল পাস করা জিএফআর বিধি ৫০ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিধায় মহা হিসাব নিয়ন্ত্রককে দায়ী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি অতিরিক্ত পরিশোধিত বিধি মোতাবেক আদায়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।