জানুয়ারি, ৩০, ২০২০
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ‘জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট’ (জেএসসি) পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষার ফল বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে নতুন করে সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ পেয়েছে ৯৫৭ ছাত্রছাত্রী। আর ফেল থেকে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১০ জন। দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড একযোগে বুধবার এ ফল প্রকাশ করে।
জানা গেছে, ফেল থেকে সরাসরি জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে আছে দু’জন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বোর্ডে একজন ও ময়মনসিংহ বোর্ডে সাতজন আছে। তবে সংশ্নিষ্টরা বলছেন, এ সংখ্যা আরও বেশি। কেননা অন্য শিক্ষা বোর্ডগুলো এ তথ্য গোপন করে পুনর্নিরীক্ষণের ফল তৈরি করেছে বলে অভিযোগ আছে।
নতুন করে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৩১৩ জন, বরিশাল বোর্ডে ৪৩, দিনাজপুর বোর্ডে ৯১, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৫৫, ময়মনসিংহ বোর্ডে ১৫০, রাজশাহী বোর্ডে ৯৩, মাদ্রাসা বোর্ডে ৪০, যশোর বোর্ডে ৮, সিলেট বোর্ডে ৪৫ এবং কুমিল্লা বোর্ডে ১১৯ জন রয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত জেএসসি-জেডিসির প্রথম ফলে ১০ শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৭৮ হাজার ৪২৯ জন।
জানা গেছে, দশ শিক্ষা বোর্ডে ফল চ্যালেঞ্জ করে এ বছর মোট আবেদন করেছিল এক লাখ তিন হাজার ৯৯৪ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তিন হাজার ১৪০ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে, যারা সবাই পাসের মুখ দেখেছে। এদের মধ্যে ফেল থেকে বিভিন্ন গ্রেডে পাস করা শিক্ষার্থী ৭৮৪ জন।
ফেল থেকে পাস করা শিক্ষার্থীর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে আছে ১৯০ জন। এ ছাড়া বরিশাল বোর্ডে ৪, দিনাজপুর বোর্ডে ৯২, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৮২, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৬৫, রাজশাহী বোর্ডে ৫১, মাদ্রাসা বোর্ডে ১৭০, যশোর বোর্ডে ৬২, সিলেট বোর্ডে ২৮ এবং কুমিল্লা বোর্ডে ১০৪ জন।
সংশ্নিষ্টরা বলছেন, ফল প্রণয়নের কাজে জড়িত শিক্ষকদের ভুলের কারণে জিপিএ ৫ পাওয়ার মতো শিক্ষার্থীরা প্রথম প্রকাশিত ফলে ফেল করেছিল। পরে তারা তাদের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে পরিবর্তিত এই ফল পেল। গত ৩১ ডিসেম্বর এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। পরদিন থেকে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন নেওয়া হয়েছিল।
সংশ্নিষ্টরা আরও বলছেন, এই ভুলের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনার রেকর্ড আছে। এর আগে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের এক পরীক্ষায় হিন্দু ধর্ম ও নৈতিকতা বিষয়ের শিক্ষার্থীদের গণহারে ফেল করার ঘটনা ঘটেছিল। ফেল করার গ্লানি সহ্য করতে না পেরে হৃদয় ঘোষ নামে এক শিক্ষার্থী ছয়তলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বুধবার রাতে সমকালকে বলেন, ‘ফল তৈরির কাজটি মানুষ করে থাকে। তাই এখানে ভুল হওয়া স্বাভাবিক। তবে এ ধরনের ভুল যারা করে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।’