জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও রাজনৈতিক নেতারা

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা | শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ পাঠ্যবইয়ে থাকবে, এটি ছাত্রদের পড়ানো হবে।” শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে তিনি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এই সনদে স্বাক্ষর করেন।

এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন এবং সনদে স্বাক্ষর করেন।


‘আজ আমাদের নবজন্মের দিন’

ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজকের দিনটি মহান দিন। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সারা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। বহু দেশে ক্লাসরুমে এ নিয়ে আলোচনা হবে—কীভাবে আমরা ঐক্যমত্যে পৌঁছেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আজ আমাদের নবজন্ম হলো। এই স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম। পুরোনো কথাবার্তা সব পাল্টে দিয়ে আমরা নতুন চিন্তা ও নীতিকে জাতীয় জীবনে নিয়ে এসেছি। এই পরিবর্তনই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”


গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা

গণআন্দোলনের নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের কাছে জাতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে। তারা পথ দেখিয়েছেন—কীভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হয়, কীভাবে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলতে হয়।”


তরুণরাই বাংলাদেশের শক্তি

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “১৮ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেক ২৭ বছরের নিচে। এটাই আমাদের সম্পদ। পৃথিবীর অনেক দেশে তরুণের অভাব, কিন্তু আমাদের দেশে তারা ভবিষ্যৎ বদলে দেওয়ার শক্তি।”

তিনি যোগ করেন, “শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীকে পরিবর্তন করার সুযোগ এসেছে আমাদের তরুণদের কাছে। বিদেশ থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ আসে—‘আমাদের তরুণ পাঠান’। কারণ এত সৃজনশীল ও বিশ্বস্ত তরুণ অন্য কোথাও নেই।”


সভ্যতার পথে উত্তরণ

ড. ইউনূস বলেন, “এই সনদের মাধ্যমে আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতায় এলাম। আগে আইন ছিল না, মানুষ যা ইচ্ছা করত। এখন আমরা এমন একটি সভ্যতা গড়ে তুলব, যেটাকে পৃথিবী ঈর্ষার চোখে দেখবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ছোট জাতি নই। আমরা কারও দয়ার ওপর নির্ভর করে বাঁচি না। মাথা উঁচু করে চলব, নিজের শক্তিতে দাঁড়াব।”


পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হবে জুলাই সনদ

প্রধান উপদেষ্টা জানান, “জুলাই সনদের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া ও মূল নীতিগুলো পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যাতে তরুণরা বুঝতে পারে কীভাবে নেতারা সিদ্ধান্তে পৌঁছান এবং দেশ গঠনে ভূমিকা রাখেন।”


‘আমাদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত চমৎকার’

বক্তব্যের শেষে ড. ইউনূস বলেন, “আজ আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা একমত হতে পারি। যদি অন্য সব ক্ষেত্রেও ঐকমত্যে আসতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ হবে অনন্য এক দেশ।”

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।