নিউজ ডেস্ক: শিক্ষা মন্ত্রণালয় জাল সনদে চাকরি নেওয়া ৫৫৬ জন শিক্ষককে চিহ্নিত করেছে। এ তালিকায় আরো অনেক শিক্ষক রয়েছে বলেও জানা গেছে। গত ১০ই অক্টোবর পর্যন্ত এই ৫৫৬ জন শিক্ষক বেতন-ভাতা হিসেবে নিয়েছেন প্রায় ১৬ কোটি টাকা। এই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত নেয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সংস্থাটি বলছে, কম্পিউটার, লাইব্রেরিয়ান এবং বিএড এই তিন বিষয়ের জাল সনদের তালিকা এটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি, এনটিআরসিএ-এর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে জাল সনদে এমপিভুক্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা দেশে ৩৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে ডিআইএ। এই নিরীক্ষা করতে গিয়ে গত দেড় বছরে শুধু তিন বিষয়ে এই জাল সনদ ধরতে পেয়েছেন। যাদের বেতন ভাতা হিসেবে নেয়া টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তালিকা সূত্র থেকে জানা গেছে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও খুলনা এই চার বিভাগের তালিকায় দেখা গেছে শিক্ষক নিবন্ধনে ভুয়া ধরা পড়েছে ৩৬৭ জন, কম্পিউটারে ১৪৭ এবং বিএড ধারী ৪২ জন। তারা চাকরি জীবনে ১৫ কোটি ৭১ লাখ ৪১ হাজার ৭০০ টাকা নিয়েছেন। বাকি বিভাগগুলো তালিকার কাজ চলছে। একই সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ে জাল সনদে চাকরি করছেন তাদের তালিকাও প্রস্তুত করছে ডিআইএ। ডিআইএ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে প্রায় ৩৬ হাজার এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে অডিট রিপোর্ট করতে গিয়ে শিক্ষকদের সনদ যাচাই করা হয়। গত বছর থেকে শুরু হওয়া এই সনদ যাচাইয়ে চার বিভাগের ধরা পড়া এই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সুপারিশ করে ডিআইএ। কিন্তু মন্ত্রণালয় ও মাউশির একটি চত্রু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ার বছর পর বছর জাল সনদে চাকরি করছেন। অভিযোগ উঠেছে, লাইব্রেরিয়ান, বিএড-এমএড, শারীরিক শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষা, ডিগ্রি পাস, দারুল ইহসান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদে তারা চাকরি করছেন।
এ ব্যাপারে ডিআইএর উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান বলেন, মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করতে গিয়ে জাল সনদে শিক্ষকতা করছেন এমন অহরহ প্রমাণ পায়। শিক্ষকতার এই মহান পেশাকে রক্ষা করতে আমরা ২০১৪ সাল থেকে সবার সনদ যাচাইয়ে কাজ শুরু করি। এরই অংশ হিসেবে গত মাস পর্যন্ত এই জাল সনদধারীদের চিহ্নিত করতে পেরেছি। এটা অব্যাহত থাকবে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি। না হয় এই জাল সনদ দিয়ে চাকরিতে প্রবেশ ঠেকানো যাবে বলে বলেও মনে করেন তিনি।
ডিআইএ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে একাধিকার এই জাল সনদধারীদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটিও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেও দৃশ্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি মন্ত্রণালয়।