নিজস্ব প্রতিবেদক,৬ জুন:
করোনা সংক্রমণ দেশে শনাক্ত হবার পর থেকেই এর বিস্তার রোধে নানান পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এরপর ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সঙ্গে শিথিল করা হয় লকডাউন। সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুসহ খুলে দেয়া হয় সরকারি-বেসরকারি অফিস। এরপরই দেশে বাড়তে থাকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, সঙ্গে মৃত্যুও। পরিস্থিতি সামাল দিতে সাধারণ ছুটির বাড়ানোর পরিকল্পনা আপাতত না থাকলেও রোববার থেকে ‘কঠিন পদক্ষেপ’ নিতে যাচ্ছে সরকার।
আগামীকাল রোববার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার কিছু স্থানে জোনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে লকডাউন শুরু হবে। সারাদেশে পুরোদমে চালু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এসব কথা জানা গেছে। এ জন্য সরকার একটি পরিকল্পনাও প্রস্তুত করেছে।
করোনা সংক্রমণ আধিক্য থাকা এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে তা লকডাউন করে দেবে সরকার। রেড জোনে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে, একান্ত প্রয়োজন না থাকলে কেউ বাইরে বের হতে পারবেন না। ওই এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিসের দরকার হবে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, বেশি আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অপেক্ষাকৃত কম আক্রান্ত এলাকাকে ইয়োলো ও একেবারে কম আক্রান্ত বা আক্রান্তমুক্ত এলাকাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোনকে লকডাউন করা হবে, ইয়োলো জোনে যেন আর সংক্রমণ না বাড়ে সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে। সতর্কতা থাকবে গ্রিন জোনেও।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও করোনা সংক্রান্ত মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘যে এলাকা রেড জোন ঘোষণা করা হবে, সেই এলাকা সম্পূর্ণ ব্লক রাখা হবে। সেই এলাকায় কেউ ঢুকবেও না, কেউ বেরও হবে না। ওই এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিসের দরকার হবে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে।’
আক্রান্ত রোগীকে আইসোলেশনে রাখা এবং আক্রান্ত রোগীর পরিবারকে কোয়ারেন্টাইনে রাখাও নিশ্চিত করা হবে। সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন করা হবে। রেড জোনে থাকা মানুষ যাতে বাইরে যেতে না পারে এবং বাইরের লোকজন যাতে সেখানে ঢুকতে না পারে সে জন্য প্রবেশ ও বের হওয়ার সড়কের মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেবেন।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, রেড জোনে শুধু ফার্মেসি, হাসপাতাল, নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রতিটি রেড জোনে স্বেচ্ছাসেবক টিম থাকবে, জনপ্রতিনিধিরা সম্পৃক্ত থাকবেন এসব টিমে। স্বেচ্ছাসেবক টিমের মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া ও মনিটরিংয়ের কাজ করা হবে।
রেড জোনে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে যাদের করোনা উপসর্গ দেখা দেবে তাদের নমুনা সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবহার করা হবে। রোগী বেশি হলে একাধিক বুথ স্থাপন করা হবে। নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক দক্ষ টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া হবে। তাদেরও রেড জোন থেকে বের হতে দেয়া হবে না।