চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ছাত্রী নিপীড়নের জের ধরে নগরীর পাথরঘাটায় সেন্ট স্কলাস্টিকা গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সিষ্টার রেনু মারীয়া পালমাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন স্কুলটির একদল সাবেক শিক্ষার্থী। তবে পুলিশ গিয়ে সাবেক শিক্ষার্থীদের স্কুল কম্পাউণ্ড থেকে সরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বামপন্থী বাসদের ছাত্র সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী স্কুল কম্পাউন্ডে ঢুকে ‘ছাত্রী নিপীড়নের বিচার চাই’ বলে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করছিল। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তাদের শান্ত করার জন্য বাইরে বেরিয়ে এলে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। বিষয়টি শোনার পর পুলিশ স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বের করে দেয়।
তবে বাসদের (মার্ক্সবাদী) ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফ্রন্টের নেত্রী তাজনাহার রিপন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষিকাকে অবরুদ্ধ করার জন্য ছাত্র ফ্রন্ট কোন কর্মসূচী পালন করেনি। এলাকার কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে ঘেরাও করেছিল।
স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত এক শ্রমিক সোমবার (১৮ জানুয়ারি) তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর ‘গায়ে হাত দিয়ে’ তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে দৌঁড়ে শ্রেণি কক্ষে চলে যায়। এ ঘটনা পরদিন অভিভাকদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের মুখে বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার অভিযোগ তদন্তে স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সিস্টার প্রভা মেরি কর্মকারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সদস্য রাখা হয়েছে অভিভাবক প্রতিনিধি জাকির হোসেন ও শিক্ষিকা বৃজেট ডায়েস, স্থানীয় কাউন্সিলর ইসমাঈল হোসেন বালি, হাসান মুরাদ বিপ্লব, নারী কাউন্সিলর লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবি ও কোতয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমানকে। আগামী ২৩ জানুয়ারির মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তবে এরপরও হঠাৎ করে সাবেক শিক্ষার্থী পরিচয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে অবরুদ্ধ করার ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’ বলেছেন কোতয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আবার প্রধান শিক্ষিকাকে ঘেরাও করার কী উদ্দেশ্য সেটা আমি বুঝতে পারছি না।
এ ঘটনায় কোতয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনাকে পুঁজি করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে চাপে রাখার জন্য নেপথ্যে কোন উসকানি কিংবা ইন্ধন কেউ দিচ্ছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। খ্রিস্টান মিশনারি পরিচালিত স্কুলগুলোর কঠোর রীতিনীতির কারণে সুবিধা আদায় করতে না পেরে কোন পক্ষ সেগুলোকে টার্গেট করেছে কিনা সেটাও ভাবছে পুলিশ।