চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন মো. ফসিউল্লাহ !

নিজস্ব প্রতিবেদক,১৪ মেপ্টেম্বর:
নিয়মিত চাকরির শেষ কর্মদিবস আজ। সে কারণে আজই নিয়মিত মহাপরিচালকের পদ থেকে বিদায় নেবেন অতিরিক্ত সচিব মো. ফসিউল্লাহ্। তবে তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন এমন খবরও একেবারে উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একজন কর্মকর্তা তার পক্ষে কাজ করছেন।

এছাড়া শিক্ষকদের সাথে নম্র আচরণের কারণে তিনি প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এ অবস্থায় তাকে ফের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয় গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেছেন, দেখা যাক কি হয়।

ডিপিই মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘প্রাথমিকের অনেক কাজই শুরু করেছিলাম। তবে শেষ করতে পারিনি। করোনার কারণে অনেক কিছু করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারছি না।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন স্কুলে বঙ্গবন্ধু কর্নারের জন্য বই ক্রয়ের জন্য বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন কিছুটা সমালোচিত হয়েছে। যদিও সকলের মত, এর জন্য অধিদপ্তর তেমন দায়ি নন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কাজ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

জানা যায়, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন প্রায় চার লাখ। ডিপিইর অধীনে জেলা-উপজেলা পর্যায়েও রয়েছে অফিস ও কর্মকর্তা। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা ধরনের সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষায়ও নানা ধরনের উদ্যোগ নিতে হয়। কিন্তু বেশির ভাগ মহাপরিচালক স্বল্প সময়ের জন্য আসায় তিনি যেসব উদ্যোগ নেন, তা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেন না। আবার নতুন ডিজি এলে আগের ডিজির অনেক কাজই বন্ধ হয়ে যায়। এতে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।

সূত্র জানায়, ডিপিইর ডিজি হিসেবে গত ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান এ এফ এম মনজুর কাদির। এরপর জানুয়ারিতে ডিজি হিসেবে যোগদান করেন মো. ফসিউল্লাহ।

মো. ফসিউল্লাহ যদি মহাপরিচালক না হন, তাহলে কে হবেন এমন হিসাবও কষছেন কেউ কেউ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ডিপিইর ডিজি হিসেবে পাঁচ-ছয়জন অতিরিক্ত সচিবের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান ডিজি মো. ফসিউল্লাহর মেয়াদ বাড়তে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। তবে তিনি ইতিমধ্যে গ্রেড-১ পেয়েছেন। ডিজি পদের জন্য আলোচনায় আছেন প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্পের (ফেজ-৩) পরিচালক মো. ইউসুফ আলী। তিনি ২০২৩ সালে অবসরে যাবেন বলে দীর্ঘদিন কাজের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ডিপিইর অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমদের নাম আলোচনায় রয়েছে। কিন্তু তাঁর চাকরি খুব বেশি দিন নেই। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক তপন কুমার ঘোষ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) রতন চন্দ্র পণ্ডিতের নামও রয়েছে আলোচনায়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে হবেন তা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি যাকে যোগ্য মনে করবেন তাঁকেই মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেবেন। তবে অতীতে দেখা গেছে, যাঁরা প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্য থেকে মহাপরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। যাতে তাঁরা সহজেই কাজগুলো বুঝতে পারেন।’

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির মুখপাত্র এস এম ছায়িদ একটি জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন ‘অধিদপ্তরে যাঁরা ডিজি হিসেবে আসছেন, তাঁরা যখন কিছু বুঝে উঠছেন, তখনই তাঁদের চাকরি শেষ হয়ে যাচ্ছে বা বদলি হয়ে যাচ্ছেন। যিনি ডিজি হচ্ছেন তিনি শুরুতে আমাদের সমস্যার ব্যাপারে নানা প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু বাস্তবায়ন শুরুর আগেই তাঁর চাকরি শেষ হয়ে যায়। যেমন—প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরও ২০১৪ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদার বিষয়টি ঝুলে আছে। তাই আমরা প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার চাই, যাতে এখান থেকেই ডিজি নিয়োগ দেওয়া যায়। আর যত দিন এটা হচ্ছে না তত দিন দীর্ঘসময় কাজ করতে পারেন—এমন কাউকে যেন ডিজি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।’

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।