নিজস্ব প্রতিবেদক,১৬ এট্রিল ২০২৩ : বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে দেশের ২৯ বিশ্ববিদ্যালয়। এদের মধ্যে সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) গুচ্ছে ২০ বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল গুচ্ছে ৩ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি গুচ্ছে ৬ বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছিলো। পরবর্তীতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে জিএসটি গুচ্ছে যুক্ত হয় আরো ২টি বিশ্ববিদ্যালয়।
কিন্তু দুই বছর যেতে না যেতেই ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভাঙন দেখা দেয় জিএসটি গুচ্ছে। দীর্ঘ ভর্তি প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
এরমধ্যে গতকাল শনিবার (১৫ এপ্রিল) এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিগত শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছে রেখে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন রাষ্ট্রপতি।
এতে বলা হয়েছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলরের অভিপ্রায় অনুযায়ী বিগত সময়ে যে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যুক্ত ছিল তাদের অংশগ্রহণে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপন জারির পর নিজেদের অবস্থানের বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশটি পেয়েছি। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবো। আগামী সোমবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে তিনি জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিনদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদককেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, আমাদের অবস্থান আমাদের সর্বোচ্চ ফোরাম সাধারণ সভা ও একাডেমিক কাউন্সিলে জানিয়েছি। রিজেন্ট বোর্ডের উপর বাকিটা নির্ভর করছে। আমরা আশাবাদী সমন্বয়হীন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অধীন থেকে বেরিয়ে বশেমুরবিপ্রবি নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষায় ফিরবে।
রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায়কে আমরা অবশ্যই সম্মানের সাথে দেখি। কিন্তু গুচ্ছের ভর্তি কার্যক্রম এতটাই সমন্বয়হীন ও দীর্ঘসূত্রিতা সৃষ্টি করছে যে, তা মূলত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে স্থবির করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজার বাড়াতে সাহায্য করছে। এটা কখনোই কাম্য নয় এবং উক্ত বাস্তবতা মহামান্য রাষ্ট্রপতি নিশ্চয়ই চাইলে খোঁজ নিয়ে বের করতে পারবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।