প্রচন্ড তাপপ্রবাহে গরমে পুড়ছে দেশ। বৃষ্টি নেই। গরমে শরীর না ঘামলেও অনুভূত হচ্ছে অসহনীয় তাপ। সঙ্গে আছে লোডশেডিং।
গত কয়েক বছরের তুলনায় গরমের তীব্রতা ক্রমশ বাড়ছে। যেন শরীর জ্বালাপোড়া করে পুড়ে যাচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষ। এরই মধ্যে নতুন তথ্য জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ূ গবেষক মোস্তফা কামাল পশাল।
পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মডেল বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, চলতি তাপপ্রবাহ চলার আশঙ্কা রয়েছে ১৪ জুন পর্যন্ত। ইউরোপীয়ান মডেল অনুসারে ৯ জুন রাজশাহী বিভাগের কোন কোন জেলায় তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। ১৪ জুন পর্যন্ত সিলেট, চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া অন্য বিভাগগুলোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা অতি সামান্য।
তিনি বলেন, ৬ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, রাজশাহী, নাটোর ও পাবনা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ থেকে ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে।
আবহাওয়া বিষয়ক তথ্য শেয়ারকারী ওয়েবসাইটে তিনি একথা বলেন। এতে আরো বলা হয়, আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া অন্যান্য বিভাগে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম। এ সময়ের মধ্যে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে।
আগামী ১৫ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল পশাল। জুন মাসের এই সময়ে সূর্য ঠিক বাংলাদেশের ওপর অবস্থান করে। ফলে দিনের বেলা সূর্যের শক্তি বাংলাদেশের বায়ূমন্ডলের ওপর প্রবেশ করে। ফলে গরমের তীব্রতা বাড়ে।
গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, গতকাল কোথাও বৃষ্টি হয়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, জুনেও স্বস্তি মিলবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও আবহাওয়া বিজ্ঞানী ড. তৌহিদা রশিদ বলেন, এবারে তাপপ্রবাহ লম্বা সময় ধরে ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। এমন কিন্তু প্রতি বছর হয় না।
আরও পড়ুন: তাপদাহে মাধ্যমিকের যে শাখার ক্লাস বন্ধ
গত ১০ মাসে সারা পৃথিবীর তাপমাত্রা দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। চলতি বছর ১ দশমিক ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। কাজেই এবারের তাপপ্রবাহের পেছনে যে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের (বৈশ্বিক উষ্ণায়ন) প্রভাব রয়েছে,এতে কোনো সন্দেহ নেই।
গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।