খুলনায় গণপিটুনি’র শিকার তরুণ শঙ্কামুক্ত: আইএসপিআর

Image

ফেইসবুকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে খুলনায় পুলিশের দপ্তরে ঢুকে যে তরুণকে পেটানো হয়েছে, তিনি এখন চিকিৎসাধীন এবং আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর।

বুধবার রাতে পৌনে ১২টার দিকে নগরের সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সাউথ) তাজুল ইসলামের কার্যালয়ে পিটুনির শিকার উৎসব মণ্ডলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছিল।

বৃহস্পতিবার আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে উৎসব মণ্ডলের বিষয়ে বলা হয়, “সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের আপ্রাণ চেষ্টায় তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তিনি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তিনি আশঙ্কামুক্ত।”

আইএসপিআর লিখেছে, বুধবার উৎসব মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘কটূক্তিমূলক’ পোস্ট করায় স্থানীয় জনগণ তাকে আটক করে খুলনা নগর পুলিশের ডিসির (দক্ষিণ) কার্যালয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপস্থিত হয়।

পরে ওই জায়গায় তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার স্থানীয় জনতা উপস্থিত হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং উৎসবকে প্রকাশ্যে শাস্তি দেওয়ার জন্য আন্দোলন করতে থাকে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতা পুলিশের ডিসির কার্যালয়ে ঢুকে ওই ব্যক্তির উপর আক্রমণ চালায়।

আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত প্রদানের কারণে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং তার সুস্থতা সাপেক্ষে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হবে।”

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা রোধ ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে সর্বদা সচেষ্ট উল্লেখ করে আইএসপিআর লিখেছে, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ওই ব্যক্তির মৃত্যু সংক্রান্ত গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য জনগণকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হল।”

যা ঘটেছে

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কয়েকজন শিক্ষার্থী বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে উৎসবকে খুলনা উপ পুলিশ কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

বিষয়টি জানাজানি হলে শত শত লোক ওই কার্যালয় ঘেরাও করে। তারা উৎসবকে তাদের হাতে তুলে দিতে বিক্ষোভ করতে থাকে।

খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে উত্তেজিত জনতা কার্যালয়ে ঢুকে উৎসব মণ্ডলকে গণপিটুনি দেয়।

ওই সময় স্থানীয় মসজিদের মাইকেও তরুণের নিহত হওয়ার তথ্য প্রচার করে উত্তেজিত জনতাকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

তরুণের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ওই এলাকা ত্যাগ করে।

উপ-পুলিশ কমিশনার তাজুল ইসলাম বলেন, “আটক উৎসব মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তারপরও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। তারা উৎসবকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।”

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।