ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও বাকৃবিতে ছাত্রদলের দাপট

Image

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও, বাস্তবে সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখন চরম আতঙ্ক ও সংশয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার মধ্যে রাতে ৩টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল (শুক্রবার) কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদলের নাম ও জিয়াউর রহমানের ছবি সম্বলিত পানির বোতল ও দলের নাম লেখা কলম বিতরণ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে তাদের ওই কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণাও করেন তারা। এছাড়াও কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের প্রটোকলে বিভিন্ন সমিতির স্টল পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তথ্য ও সহায়তা প্রদান করার জন্য স্টলগুলো পরিদর্শনের সময় উপাচার্যের সাথে ছিলেন বাকৃবি শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক মো. আতিকুর রহমান , সদস্যসচিব মো. শফিকুল ইসলামসহ ছাত্রদলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা। ছাত্রদলের এ সকল কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

পরে গতকাল মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে লেজুড়বৃত্তিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন ফজলুল হক হলের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রাত দেড়টার দিকে মিছিলে যোগ দেন শহীদ শামসুল হক হল ও জামাল হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা। প্রায় তিনশতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ওই মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আসেন তারা। এসময় ‘রাজনীতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রাজনীতির দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’-সহ রাজনীতির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন তারা।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফজলুল হক হলের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘ফজলুল হক হলে যে সকল শিক্ষার্থীরা আগে ছাত্রলীগ করতেন তারাই এখন ছাত্রদলের রাজনীতি করার জন্য অন্যদেরকে আহ্বান করছেন। অনেকদিন ধরেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথে লিয়াজোঁ করে এই অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। গতকাল ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ছাত্রদলের নামে পানি বিতরণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটির প্রচারণা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন হলের শিক্ষার্থীরা। পরে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছে যে, তারা কোনো দলীয় ব্যানারে বা দলের নামে স্টল দেবে না। তাদের পানির বোতল বা কলমগুলো আমরা যাচাই করে দেখি নি, এটি আমাদের ভুল হয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সাথে আলোচনা না করেই মিছিল করেছে, যা একেবারেই কাম্য নয়। রাত দুইটা পর্যন্ত তারা মিছিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় অনেক অসুস্থ ব্যক্তি আছেন, ছোট বাচ্চারা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা থেকে গতকাল রাতে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে অনেক অভিযোগও এসেছে। আমি সার্বিক নিয়ে আলোচনায় বসব।’

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।