ডেস্ক: প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধা বহাল রাখার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতাকর্মীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এডিসি আজিমুল হক নিজে শাহবাগে এসে এ অনুরোধ করেন। এর আগে বুধবার (৩ অক্টোবর) রাত ৯টায় সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালসহ ৬ দফা দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাগে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি কমতে থাকে।রাত আড়াইটায় ভিড় কমে যায় ও ভোর ৪টার প্রায় খালি হয়ে যায়। তবে সকাল হতে হতে জনসমাগম বাড়বে বলেও জানান নেতারা।
ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এডিসি আজিমুল হক শাহবাগে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের বলেন, ‘রাত বলে কোনও বাঁধা দেওয়া হয়নি। দিনের বেলা রাস্তা বন্ধ রাখা যাবে না। ওপরের নির্দেশে এখানে আমি ছুটে এসেছি। দিনের বেলা রাস্তা বন্ধ রাখা যাবে না।’
এডিসির কথার জবাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতা মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা রাজপথেই থাকব। কোটা বাতিলের আন্দোলনেও রাস্তা অবরুদ্ধ ছিল।’
মেহেদীর এই কথার জবাবে এডিসির পাশে থাকা শাহবাগ থানার একজন এসআই বলেন, ‘তাহলে তাদের সঙ্গে যেমন আচরণ করা হয়েছে, আপনাদের ক্ষেত্রেও তাই হবে।’
প্রসঙ্গত, বুধবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরি থেকে সব ধরনের কোটা বাতিলের প্রস্তাব অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এরপর কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড শাহবাগের অবস্থান কর্মসূচিতে যোগদান করে। রাত ৯টায় সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালসহ ৬ দফা দাবিতে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- (১) সামাজিক মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। (২) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। (৩) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিসিএসসহ সব চাকরির পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে। (৪) মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। (৫) স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার ও বংশধরদের চিহ্নিত করে সরকারি সব চাকরি থেকে বহিষ্কার, নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে। (৬) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।