নিজস্ব প্রতিবেদক, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২২ ।
রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে এক কলেজছাত্রীকে তুলে নিয়ে চার দিন আটকে রেখে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তার নাম মনির হোসেন শুভ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানায় র্যাব। লালবাগ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আরো পড়ুনঃ ছাত্রীকে ৪ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের পর ফেলে গেল ঢাবি এলাকায়
গ্রেপ্তার শুভর বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দাবি, ওই তরুণীর সঙ্গে এক মাস আগে লালবাগের একটি বাসায় এক বন্ধুর মাধ্যমে শুভর পরিচয় হয়। তাদের চার-পাঁচবার দেখা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। গত পাঁচ দিনেও তাদের দেখা হয়েছে। তবে অপহরণ ও ধর্ষণের কথা শুভ অস্বীকার করেছে। শুভ বিবিএ শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে।
ধর্ষণের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই ছাত্রীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় ধর্ষকরা। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় এক নারী তাকে উদ্ধার করে বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
ওই ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, তার মা বেঁচে নেই। বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি প্রাইভেট পড়তে শিক্ষকের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে লালবাগের কেল্লার মোড়ে আল আমিন ও শুভ নামে দুজন তাকে মুখে রুমাল চেপে ধরলে তিনি চেতনা হারিয়ে ফেলেন। পর চেতনা ফিরলে দেখতে পান, একটি পরিত্যক্ত ভবনের ভেতরে তিনি। ভবনে তারা ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। ভবনটি কোন এলাকায়, তা চিনতে পারেননি।
ছাত্রী অভিযোগ করেন, চেতনা ফিরলে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তিনি শুভ ও আল আমিনের কাছে কাকুতি-মিনতি করেন। কিন্তু তারা কর্ণপাত করেননি। উল্টো তারা ধর্ষণ করতে চান। এতে বাধা দিলে তাকে তারা মারধর ও ধর্ষণ করেন। এভাবে চার দিন আটকে রেখে তাকে প্রতিদিন তারা দুজন পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে বুধবার বিকেলে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রেখে পালিয়ে যান ওই দুজন। সেখান থেকে এক নারী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
শুভ ও আল আমিন তার পূর্বপরিচিত বলে জানান ছাত্রীটি। তিনি বলেছেন, কিছুদিন ধরে শুভ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় ফোনে উত্ত্যক্ত করা শুরু করেন।
এদিকে ওই খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, ‘মেয়েটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মামলা করা হবে। তবে অভিযুক্ত শুভ ও আল আমিনকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।’