কলাপাড়ায় চুরি-ডাকাতি আতংক, রাত জেগে গ্রামে গ্রামে পাহাড়া, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন

ড়মোয়াজ্জেম হোসেন, পটুয়াখালী :
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডাকাতি ও ছিচকে চোরের উপদ্রপ বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার দু’টি ইউনিয়নের অন্তত: ১০টি গ্রামে মানুষ রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় চরম বিঘ্ন ঘটছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পর পর কয়েকটি বাড়ীতে ডাকাতি ও চুরির ঘটনা ঘটায় মানুষ এখন নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে পাহাড়া দিতে শুরু করেছে।
গত এক মাসে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারায় হিট বাংলাদেশের অফিস, চাদঁপাড়া গ্রামের শিক্ষক শেখর মন্ডলের বাড়ী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সখানাত বিশ্বাস, অতুল চন্দ্র বিশ্বাস, বিকাশ বিশ্বাস এবং চাকামইয়া গ্রামের নিশানবাড়িয়া গ্রামের শিক্ষক নির্মল সরকার, পরিমল সরকারের বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যেকটি বাড়ীতে মুখোশধারীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বার্নালংকার সহ নগদ টাকা লুট করে নেয়।
এছাড়া পৌরশহরের মংগলসুখ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষক আলমগীর হোসেনের বাড়ীতে দিনে দুপুরে ঘরের তালা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে ঢুকে স্বর্নালংকার ও নগদ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। গত শুক্রবার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের যতিন্দ্র নাথের বাড়ী এবং সোমবার সন্ধ্যায় পৌরশহরের চিংগড়িয়া এলাকার সুভাষ মজুমদারের বাড়ীতে চুরির ঘটনা ঘটায় মানুষের মধ্যে আতংক বেড়ে গেছে। এদের কেউই ভয়ে আইনের আশ্রয় নেয়নি এবং পুলিশও এটিকে চুরির ঘটনা বলে দায় এড়িয়ে গেছে জানিয়েছেন ভ‚ক্তোভোগীরা।
চুরি ঠেকাতে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা, নেয়ামতপুর, ইসলামপুর, চাঁদপাড়া, আদমপুর, আমিরাবাদ। এছাড়া চাকামইয়া গ্রামের কাঁঠালপাড়া, নিশানবাড়িয়া, গান্ধাপড়া সহ বিভিন্ন গ্রামে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ করে পাহাড়া দিচ্ছে। নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাষক আনোয়ার হোসেন জানান, পরপর কয়েকটি বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটায় মানুষ রাত জেগে ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ করে পাহাড়া দিচ্ছে। একই ইউনিয়নের নেয়ামতপুর গ্রামের অনিল চন্দ্র ডাকুয়া জানান, তার বাড়ীর কাছে যতিন্দ্র নাথের বাড়ীতে সন্ধ্যায় চুরির ঘটনা ঘটায় মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে।
ওই গ্রাম সহ পাশের গ্রামের মানুষ এখন নিজেদের জানমাল রক্ষায় নিজেদের উদ্যোগে পাহাড়া দিচ্ছেন। চাকামইয়া ইউনিয়নের কাঁঠালপাড়া এলাকার গনি মিয়া জানান, শিক্ষক নির্মল সরকারের বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনার পর কাঁঠালাপাড়াসহ আশে পাশের গ্রামের মানুষ একেক গ্রুপে ৪/৫ জন করে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকায় ডাকাতি রোধে পুলিশের হ্যান্ড মাইকিংয়ের কারনে নির্ঘুম রাত কাটে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের। পুলিশও রাতভর পেট্রোল ডিউটি করে ওই এলাকায়। চিংগড়িয়া অধিবাসী ও কলাপাড়া চৌকি আদালত আইনজীবি কল্যান সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাথুরাম ভৌমিক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
কলাপাড়া থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা আমার কানে এসেছে। যেসব এলাকায় মানুষ পাহাড়া দেয় সেখানে মাঝে মাঝে পুলিশ পেট্রোল ডিউটি করে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।