ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহাসিক আর জি কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণের পর হত্যাকে ঘিরে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। যার রেশ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশেও। নিহত চিকিৎসক ছিলেন কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪ টা নাগাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ইন্টার্ন চিকিৎসক মৌমিতাকে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে ❝আওয়াজ তোলো নারী❞ শীর্ষক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় ধর্ষকের ফাঁসি চাই, তনু থেকে মৌমিতা কুমিল্লা থেকে কলকাতা সহ নানা ধরণের প্লাকার্ড হাতে নারী শিক্ষার্থীদেরকে অবস্থান করতে দেখা যায় এবং স্লোগান দিতে শোনা যায়।
প্রতিবাদ সমাবেশে ঢাবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে বলেন, মৌমিতকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। প্রথমে তার ধর্ষণের খবরটি আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পরবর্তীতে পোস্ট মর্টামে দেখা যায় তার শরীরে ১৫০ গ্রাম বীর্য পাওয়া গেছে যেখানে একজন পুরুষ দিতে পারে ৫ থেকে ৬ গ্রাম বীর্য। পরবর্তীতে তাকে খুব নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমন ভাবে গলা চেপে ধরা হয়েছে যে তার চোখ দিয়ে রক্ত বের হিয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্ষণ মামলার বিচার হয়না বললেই চলে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ধর্ষণ মামলায় বিচার হয়েছে মাত্র ৫ টি মামলার। বাংলাদেশে এখন স্বৈরশাসন উৎখাত করে নতুন ভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে। আমরা আশা করবো দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা আপনারা নিশ্চিত করবেন। ধর্ষণের মামলায় যেসব আইন, নিয়ম-নীতি আছে সেগুলো যেন শক্ত হাতে প্রয়োগ করা হয়।
ঢাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আনিয়া ফাহিম বলেন, দেশের আইন প্রয়োগকারী এলিট ফোর্সগুলোর হাতে কোনো ক্ষমতা নাই। তাদের এমন কোনো স্বাধীনতা নেই যে তারা স্বাধীনভাবে একটি খুনের, একটি ধর্ষণের তদন্ত করবে।
এসময় তিনি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সময়ের ধর্ষণের কথা উল্লেখ করে বলেন, সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্তৃক এক নারী গণ ধর্ষণের শিকার হয়, ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরে তনু ধর্ষণকাণ্ডসহ দেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া অসংখ্য ধর্ষণের কোনো নিরপেক্ষ বিচার হয়নি। এসময় তিনি ধর্ষকদেরকে গোপনে বিচার না করে জনসম্মুখে বিচারের দাবি জানান।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ পরবর্তী শাহবাগ থেকে কার্জন এবং শেষে কার্জন থেকে ঘুরে এসে আবার টিএসসি এসে তাদের সমাবেশটি শেষ করে।