ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে প্রথমে মারধর, পরে কান ধরে উঠবস করানোর তিনমাস পর নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেছেন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত।
শহরের খানপুর মোকরবা রোডের ৬ তলা ভবনের ভাড়া বাসা থেকে রোববার সকাল ৯টায় স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেন শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। পুলিশের একটি দল কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে স্কুলে নিয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার এএসআই সরাফত জানান, সারারাত পাহারা দেওয়া হয়েছে শ্যামল কান্তি ভক্তকে। এরপর সকালে বন্দর থানা পুলিশ শ্যামল কান্তিকে স্কুলে পৌঁছে দেয়।
বন্দর থানার ডিউটি অফিসার নাছির জানান, স্কুল ছুটি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ ওই স্কুলে শিক্ষকের নিরাপত্তার জন্য অবস্থান করবে এবং তাকে পুনরায় বাসায় পৌঁছে দেবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ধর্ম নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ এনে স্কুল কমিটির লোকজন ও স্থানীয়রা প্রথমে মারধর করে। পরে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান কান ধরে উঠবস করান।
পরে ওই রাতেই শ্যামল কান্তি ভক্তকে প্রথমে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরদিন শহরের খানপুরে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ২০ মে পুলিশের প্রহরায় শ্যামল কান্তি ভক্তকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত ৯ জুন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রিলিজ দেওয়ার পর ওইদিন বিকেলে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের নগর খানপুরে মোকরবা সড়কের বাসায় উঠেন। সেই থেকে তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় শ্যামল কান্তিকে বরখাস্ত করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। তার দুইদিনের মাথায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাময়িক বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে স্বপদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত জানান। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় ওই স্কুল পরিচালনা কমিটিকে বাতিলের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী।