কঙ্গনাকে থাপ্পড় মারা নারী কনস্টেবলের জন্য লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা

Image

বলিউড অভিনেত্রী ও বিজেপি থেকে নির্বাচিত লোকসভা সদস্য কঙ্গনা রনৌতকে চড় মারা ভারতের কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) সদস্যের সেই নারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে কঙ্গনার গালে চড় মারা জন্য ওই নারী কনস্টেবলকে এক লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছেন পাঞ্জাবের এক ব্যবসায়ী। তার নাম শিবরাজ সিং বেইনস।

এ ঘটনায় তিনি কুলবিন্দর কাউর নামে সাহসী ওই নারী নিরাপত্তারক্ষীকে অভিবাদন জানিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। তাতে তিনি পাঞ্জাবের জনগণ ও পাঞ্জাবের সংস্কৃতি রক্ষার জন্য কুলবিন্দরকে অভিবাদন জানানা। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শের সিং মহীভাল একজন কৃষকনেতা। তিনি পাঞ্জাবের কাপুরথালা শহরের কিষান মজদুর সংহর্ষ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।

কুলবিন্দরের বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে তাঁর পক্ষে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন এই নিরাপত্তাকর্মীর ভাই শের সিং মহীভাল। যিনি নিজে কৃষক আন্দোলনের একজন সংগঠক। একটি ভিডিওতে তিনি বলেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমের খবরে আমি চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমি এখন বুঝতে পেরেছি যে ঘটনাটি ঘটেছে কঙ্গনার মুঠোফোন ও পার্স তল্লাশির সময়ে। কঙ্গনা বলেছিলেন যে কৃষক বিক্ষোভের সময় নারীরা সেখানে গেছেন ১০০ রুপির জন্য। এই তর্কাতর্কির মধ্যে আমার বোনের ক্ষুব্ধ হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটা থেকেই ঘটনাটি ঘটেছে।’

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন কঙ্গনা। নির্বাচনে তিনি দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির প্রার্থী হিসেবে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত মঙ্গলবার লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে দিল্লি আসার পথে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে অনাকাঙ্ক্ষিত ওই ঘটনার মুখোমুখি হন কঙ্গনা।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর জানিয়েছে, ২০২০ সালের কৃষক আন্দোলন নিয়ে কঙ্গনার করা মন্তব্যের বিষয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন কুলবিন্দর। সে কারণে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) চণ্ডিগড় বিমানবন্দরে কঙ্গনাকে হাতের নাগালে পেয়েই এতদিনের পুষে রাখা ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি। এদিকে, থাপ্পড়কাণ্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে কুলবিন্দরকে চিৎকার করে বলতে শোনা যায়, ‘আমার মা ছিলেন ওখানে’।

জানা গেছে, দিল্লিজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করা কৃষক আন্দোলনে ১০০ টাকার বিনিময়ে অংশ নিয়েছিলেন নারীরা, সে সময় এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন কঙ্গনা। সেই বক্তব্যের জবাব দিয়ে কুলবিন্দর জানান যে, তার মাও ছিলেন সেই আন্দোলনে।

তাকে বলতে শোনা যায়, ‘কঙ্গনা বলেন নারীরা ১০০-১০০ টাকায় বসেছিলেন কৃষক আন্দোলনে, উনি গিয়ে বসবেন ওখানে? আমার মা বসেছিলেন ওখানে, যখন উনি ওই মন্তব্য করছিলেন।’ কুলবিন্দর এটিও স্পষ্ট করে দেন যে, কঙ্গনাকে ‘কৃষকদের অসম্মান’ করার জবাব দিয়েছেন তিনি।

২০২০ সালে ভারতজুড়ে একজোট হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন কৃষকরা। এতে উত্তাল হয় দিল্লির পরিস্থিতি। সেই সময় ওই আন্দোলনে বসে থাকা এক বৃদ্ধার ছবি পোস্ট করে কঙ্গনা লেখেন, ‘১০০ টাকাতেই লভ্য’। বিপুল জনরোষের মুখে সেই পোস্ট মুছতে বাধ্য হন অভিনেত্রী।

থাপ্পড়কাণ্ডের পরও দুই দলে বিভক্ত নেটিজেনরা। একাংশের মতে, আদর্শের পার্থক্য থাকলেও কারও গায়ে হাত তোলা ঠিক নয়। অন্যদিকে, আরেকদল বলছে, ‘ওই নারী কনস্টেবল ঠিক কাজই করেছেন।’

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।