শরীরে জমতে থাকা মেদ যদি একবার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তাহলেই যত বিপদ-আপত্তি! কী বিপদ সেই প্রশ্ন জাগছে মনে, তাই তো? সম্প্রতি একটি স্টাডি প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গেছে ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে ডায়াবেটিস রোগ বাসা বাঁধার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, আর এক সময়ে গিয়ে ডায়াবেটিস ডেকে আনে ক্যান্সার রোগকে!
কথাটা শুনে যতই অবাক হন না কেন, দা ল্যান্সেট ডায়াবেটিস অ্যান্টি এন্ডোক্রিনোলজি পত্রিকায় প্রকাশিত এক স্টাডি অনুসারে ওজন বৃদ্ধি, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিস যদি সঙ্গী হয় তাহলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পায়। তাই তো গবেষকরা “বি এম আই” বা বডি মাস ইনডেক্স সব সময় ২৫ এর নিচে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের মতে বি এম আই এর থেকে উপরে গেলেই বিপদ!
প্রসঙ্গত, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন নামক সংস্থা “ভাইটাল সাইন” নামক একটি রিপোর্চ প্রকাশ করেছে। তাতে যা লেখা রয়েছে তা শুধু কপালে ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট নয়, বরং ভয়ঙ্করও বটে! কী লেখা রয়েছে সেই রিপোর্টে জানেন?
ধাপে ধাপে একাধিক কেস স্টাডিকে তুলে ধরে বিশেষজ্ঞরা প্রমাণ করেছেন যে ওজন বৃদ্ধির কারণে ক্যান্সার রোগ কিভাবে শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এই বক্তব্যটা যে বেজায় ফেলনা নয়, তা আমেরিকায় হওয়া একটি সমীক্ষাতেও প্রমাণিত হয়েছে। সেদেশ ওবেসিটির শিকার প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের শরীরেই ক্যান্সার সেলের সন্ধান পাওয়া গেছে, যার পিছনে অতিরিক্ত ওজনকেই দায়ি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার নামক সংস্থার করা একটি কেস স্টাডিতে দেখা গেছে ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকলে বিশেষ ধরনের কিছু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যার মধ্যে অন্যতম হল মাল্টিপাল মাইলোমা, অ্যাডিনোকার্সিনোমা, থাইরয়েড ক্যান্সার, পোস্ট মেনোপোজাল ব্রেস্ট ক্যান্সার, গলব্লাডার, স্টমাক, লিভার, কিডনি, ওভারি, ইউটেরাস এবং কলোরেকটাল ক্যান্সার প্রভৃতি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশ করা বেশ কিছু রিপোর্টে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে এদেশে যুবসমাজের সিংহভাগই ওবেসিটির সমস্যায় ভুগছে। আর এর পিছনে মূল কারণ হল অনিয়ন্ত্রিত জীবন এবং জাঙ্ক ফুডের প্রতি অফুরন্ত ভালবাসা। এমন অবস্থায় আমাদের দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যত যে বেজায় অন্ধকারে, তা বলা যেতেই পারে। কোনও ভাবেই কি এই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব! তবে তার জন্য ওজন কমানোটা একমাত্র উপায়।
তবে এক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যাও দেখা দিচ্ছে আজকাল। কী সেই সমস্যা? স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে অনেকেই ওজন কমাতে তো চাইছেন, কিন্তু প্রতিদিন জিমে যাওয়ার সময় করে উঠতে পারছেন না। ফলে যে তিমিরে থাকার সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছেন!
এক্ষেত্রে জিমে না গিয়েও আরেকভাবে ওজন কমানো যেতে পারে। তবে তার জন্য ডায়েটের দিকে নজর দিতে হবে। গবেষকদের মতে বাড়িতে নিয়মিত হাল্কা চালে শরীরচর্চা করার পাশাপাশি প্রতিদিন যদি কয়েকটি সবজি খাওয়া যায়, তাহলে ওজন কমতে পারে চোখে পরার মতো।