উপবৃত্তি পেতে শিক্ষার্থী নির্বাচন শুরু ২৭ ফেব্রুয়ারি

Image

ডেস্ক,২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩: সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতাভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিকৃত উপবৃত্তি যোগ্য শিক্ষার্থী নির্বাচন ও তথ্য অন্তর্ভুক্তি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।

আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত এইচএসসি-এমআইএস সার্ভারে নির্ভুলভাবে শিক্ষার্থীদের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তির আবেদন ফরম বিতরণ, তা জমা নেয়া ও যাচাই বাছাই করে শিক্ষার্থীদের তালিকা করতে হবে। তালিকা মোতাবেক শিক্ষার্থীদের তথ্য এইচএসপি-এমআইএসে উপজেলা বা থানা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। ১৯ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য অন্তর্ভুক্তির সুবিধা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। উপজেলা ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা কমিটির মাধ্যমে সফটওয়্যারে নির্ধারিত অপশন ব্যবহার করে ২২ মার্চের মধ্যে এইচএসপি-পিএমইটিতে পাঠাবেন।

আরো পড়ুন: ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাউশিতে যে তথ্য পাঠাতে নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি থেকে বিষয়টি জানিয়ে ইতোমেধ্যে সব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিটি প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

যেভাবে শিক্ষার্থী নির্বাচন :

জানা গেছে, উপবৃত্তি পেতে কর্মসূচির আওতাভুক্ত শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। দারিদ্র্য ও প্রক্সি মিন্স টেস্টিং যৌথ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে তথ্য যাচাই বাছাই এবং একটি বিশেষায়িত সফটয়্যারের মাধ্যমে উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। শুধুমাত্র ষষ্ঠ এবং একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আওতায় উপবৃত্তি পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। তবে, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যারা উপবৃত্তি কর্মসূচির বাইরে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে নতুন ভর্তি হয়েছেন, তারা উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণির কোন শিক্ষার্থী উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। শিক্ষার্থী অন্য কোনো সরকারি উৎস থেকে উপবৃত্তি বা অভিভাবক শিক্ষাভাতা গ্রহণ করলে উপবৃত্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। এছাড়াও শিক্ষা বোর্ড থেকে মেধা বা সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী উপবৃত্তি প্রাপ্তির জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

১০টি উপজেলার ক্ষেত্রে উপবৃত্তির সফটওয়্যারে এন্ট্রি করা সব শিক্ষার্থী উপবৃত্তির জন্য নির্বাচিত হবে। এ উপজেলাগুলো হলো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, আলিকদম, কুড়িগ্রামের সদর, চর রাজিবপুর, চিলমারী ও উলিপুর, দিনাজপুরের কাহারোল ও খানসামা এবং কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর।

শিক্ষার্থী নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নীতিমালা ও গাইডলাইন অনুসরণের মাধ্যমে সারাদেশে ষষ্ঠ নবম ও একাদশ শ্রেণির উপকারভোগী শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। দারিদ্র্য নিরূপণের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ব্যবহৃত প্রশ্নমালার ওপর ভিত্তি করে একটি নমুনা আবেদনপত্রে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের ফরমেট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও উপজেলা বা মেট্রোপলিটান এলাকার উপদেষ্টা কমিটি শিক্ষার্থীর আবেদনের তথ্যের সত্যতা যাচাই বাছাই করবে। আবেদনপত্রের তথ্য যাচাই বাছাই শেষে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে এইচএসপি এমআইএসে এসব তথ্য এন্ট্রি করতে হবে। তথ্য এন্ট্রির পর প্রতিষ্ঠান থেকেই তথ্য অনলাইনে উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠাতে হবে।

উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপবৃত্তির জন্য উপজেলা বা থানায় পাঠানো সব আবেদনপত্র উপজেলা বা মেট্রোপলিটন এলাকার উপদেষ্টা কমিটির বিবেচনার জন্য পেশ করবেন এবং এডভাইজারি কমিটির অনুমোদন নিয়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তথ্য উপজেলা বা থানা থেকে এইচএসপি বা প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টে পাঠাবেন।

সারাদেশের উপবৃত্তি উপকারভোগী শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট অফিসের এমআইএস সেলের প্রযুক্তিগত সহায়তায় এইচএসপি ইউনিটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। লৈঙ্গিক ভিত্তিতে নয় বরং দারিদ্র্যের ভিত্তিতে উপকারভোগী শিক্ষার্থী নির্বাচন হবে। ফলে এ প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। শারীরিক প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, প্রাক্তন ছিটমহলের বাসিন্দা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রজন্ম যথাযথ যাচাই বাছাইয়ের পর সরাসরি এ কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে এ ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষ দেয়া সনদ বা প্রত্যায়ন পত্রের সত্যায়িত কপি এমআইএসে সংযুক্ত এবং সংরক্ষণ করতে হবে। সব শিক্ষার্থীর ১৭ সংখ্যার অনলাইন জন্মসনদ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীর তথ্য এইচএসপি ও এমআইএসে এন্ট্রি করলেই উপবৃত্তি পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। আবেদনকারী শিক্ষার্থী দেয়া তথ্য এইচএসপি এমআইএসের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে উপবৃত্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের কমিটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত আবেদনপত্রের তথ্য যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করবেন। কমিটির সদস্যরা প্রয়োজনে শিক্ষার্থীর বাড়ি পরিদর্শন করে আবেদনপত্রে দেয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করবেন। সত্যতা যাচাই শেষে শিক্ষার্থীদের তথ্য এইচএসপি এমআইএসে এন্ট্রি করে ‘আবেদনপত্রের সব তথ্য সঠিক আছে’ মর্মে একটি প্রত্যায়নপত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠাবেন এবং আবেদনপত্রের হার্ডকপি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করবেন। তবে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের কমিটিতে উপকারভোগী নির্বাচনে কোনো অসত্য তথ্য দিলে বা অনিয়ম করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে। এ কমিটি প্রয়োজনে যেকোনো সময়ে সভায় মিলিত হতে পারবে।

জানা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বা বেতন মওকুফ থাকবে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অনুকূলে স্কিম ডকুমেন্ট মোতাবেক নির্ধারিত হারে টিউশন ফি বা বেতন দেয়া হবে। উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনক্রমেই টিউশন ফি বা বেতন আদায় করা যাবে না।

নতুন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে পাঠদানের অনুমতি বা স্বীকৃতি পেলে তা সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। সেক্ষেত্রে এইচএসপি ও এমআইএসের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে স্কিম পরিচালক বরাবর আবেদন করতে হবে।

২০২৩ সালের উপবৃত্তির তথ্য এন্ট্রিতে যে সব তথ্য প্রয়োজন হবে

শিক্ষার্থীর ছবি।

শিক্ষার্থীর জন্মসনদ। জন্মসনদ নম্বর অবশ্যই ১৭ ডিজিটের হতে হবে।

পিতা/মাতা/অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর (১০ অথবা ১৭ সংখ্যা)। ১৩ সংখ্যার জাতীয় পরিচয়পত্রের ক্ষেত্রে প্রথমে জন্মসাল বসিয়ে ১৭ সংখ্যার রুপান্তর করতে হবে।

শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে কোন বৈধ/সচল অনলাইন ব্যাংক/মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট নম্বর।

অনলাইন/এজেন্ট ব্যাংক এর ক্ষেত্রে একাউন্ট নম্বর ১৩-১৭ ডিজিট এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে একাউন্ট নম্বর ১১-১২ ডিজিট হতে হবে।

পিতা অথবা মাতার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে চাইলে, তাদের নিজ জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক হবেন পিতা অথবা মাতা। কেবল মাত্র পিতা মাতার অনুপস্থিতিতে অন্য কোন ব্যক্তিকে ভাই/বোন/
দাদা/দাদী/নানা/নানী/ইত্যাদি) অভিভাবক হিসাবে নির্বাচন করা যাবে।

সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি বলছে, সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তার আওতাধীন সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিষয়টি অবহিত করে বিষয়টি মনিটরিং করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে সৃষ্ট যেকোন সমস্যার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন। উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইউজার আইডি বা পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে বা অন্য কোন কারণে এইচএসপি এমআইএসে লগ ইন করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে ই মেইলে ([email protected]) যোগাযোগ করতে হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠিতে, শিক্ষার্থী নির্বাচন, আবেদন, আবেদন যাচাই-বাছাই, অ্যাকাউন্ট খোলা, শিক্ষার্থী নির্বাচন ও তথ্য অন্তর্ভুক্তির বিস্তারিত প্রক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে। একইসাথে শিক্ষার্থীদের আবেদন ফরমও প্রকাশ করা হয়েছে।

উপবৃত্তির জন্য অনলাইন আবেদন ফরম ২০২৩ pdf

স্কুল-কলেজের ৬ষ্ঠ ও একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরম পূরণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছে জমা দিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তির আবেদনের পিডিএফ ফরম (চার পাতা) শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।

নিচের লিংক উপবৃত্তির ফরম ডাউনলোডের পর সকল তথ্য পূরণ করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়ে উপবৃত্তির আবেদন করতে হবে।

  • উপবৃত্তির পিডিএফ আবেদন ফরম ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।