শফিকুল ইসলাম | : উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (৬ষ্ঠ-১২শ) প্রভাষকদের এমপিও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা হতে হবে নূন্যতম ২৫ জন। তবে বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষকের এমপিও প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এ সংখ্যা ন্যূনতম ১৫ জন হতে হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (৬ষ্ঠ-১২শ) অতিরিক্ত শ্রেণি শাখা/বিষয়/বিভাগ খোলার শর্তাবলিতে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা খোলার জন্য প্রতি বিভাগে ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সাধারণ প্রতি বিভাগে চারটি বিষয় থাকতে হবে। তবে ৫ম বা ততোধিক বিষয় খুলতে হলে ওই বিষয় কমপক্ষে ২৫ জন শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে মোট শিক্ষার্থী ১০০ জন হতে হবে।
এমপিওর খসড়া নীতিমালায় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (৬ষ্ঠ-১২শ) বিদ্যমান পদের তুলনায় ৭টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতন ভাতার সরকারি অংশ) পেতে হলে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মতই শহর অঞ্চলে ন্যূনতম ৬০ জন শিক্ষার্থীকে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পাসের হার ন্যূনতম ৭০ শতাংশ হতে হবে। আর মফস্বলের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৪০ জন শিক্ষার্থীকে পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে এবং পাসের হার ন্যূনতম ৭০ শতাংশ। এমপিওর প্রস্তাবিত খসড়া নীতিমালায় জনবল কাঠামোতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে (৬ষ্ঠ-দশম) ২৪ জন থেকে ৭ জন বাড়িয়ে ৩১ জন করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক পদসংখ্যা ১ জন থাকবেন। এ পদে নিয়োগের জন্য ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগবে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সমমান অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অথবা বিএড ডিগ্রি/ সমমানসহ স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।
অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের অভিজ্ঞতা এবং চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সসীমার বিষয়ে প্রস্তাবিত নীতিমালায় বলা হয়েছে উপাধ্যক্ষ/ সহকারী অধ্যাপক পদে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ প্রভাষক/সহকারী অধ্যাপক পদে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অথবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৫ বছরের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা লাগবে। প্রস্তাবিত ৫ম গ্রেডে বেতন স্কেল ধরা হয়েছে (৪৩০০০-৬৯৮৫০/)।
খসড়া নীতিমালায় সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ সংখ্যা ১টি,সহকারী অধ্যাপক(বাংলা) পদসংখ্যা ১টি, সহকারী অধ্যাপক(ইংরেজি) পদ সংখ্যা ১টি, সহকারী অধ্যাপক (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)পদ সংখ্যা ১টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সহকারী অধ্যাপক(ঐচ্ছিক প্রতি বিষয়ে)পদ সংখ্যা ১টি। সহকারী শিক্ষক(বাংলা)পদ সংখ্যা ১টি। সহকারী শিক্ষক(বাংলা), সহকারী শিক্ষক(ইংরেজি),সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান), পদ সংখ্যা ১টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষক (ব্যবসায় শিক্ষা)পদ সংখ্যা ১টি। সহকারী শিক্ষক (ভৌতবিজ্ঞান),সহকারী শিক্ষক (গণিত),পদ সংখ্যা ১ তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সহকরি শিক্ষক( ধর্ম), সহকারী শিক্ষক( শারীরিক শিক্ষা), পদ সংখ্যা ১টি, সহকারী শিক্ষক(কৃষি), সহকারী(শিক্ষক(গর্হস্থ্য),পদ সংখ্যা ১টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষক(চারূকারূ)পদ সংখ্যা ১টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
সহকারী শিক্ষক( জীব বিজ্ঞান)পদ সংখ্যা ১টি। প্রদর্শক পদ সংখ্যা ১টি। অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদ সংখ্যা ১টি। সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার পদ সংখ্যা ১টি। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপরেটর পদ সংখ্যা ২টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
গবেষণাগার/ল্যাবসহকারী পদ সংখ্যা ১টি। অফিস সহায়ক পদ সংখ্যা ২টি। তবে এ ক্ষেত্রে ১টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।নিরাপত্তা কর্মী, মালী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নৈশ প্রহরী, আয়া( বালিকা বিদ্যালয়ের জন্য)পদ সংখ্যা ১টি। তবে এ ক্ষেত্রে ২টি পদ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হবে ১০০ নম্বরের মধ্যে দেয়া গ্রেডিংয়ের ভিত্তিতে। একাডেমিক স্বীকৃতির বয়স, শিক্ষার্থী সংখ্যা, পরীক্ষার্থী সংখ্যা এবং উত্তীর্ণের সংখ্যা- এ চারটি বিষয়ে ২৫ নম্বর করে দেয়া হবে। নীতিমালায় অসত্য তথ্য দিয়ে বা জালিয়াতি করে এমপিওভুক্তির জন্য প্রধান প্রতিষ্ঠান ও পরিচালনা কমিটি দায়ী থাকবেন বলে উল্লেখ আছে। এ ক্ষেত্রে ‘যথোপযুক্ত আইনানুগ’ ব্যবস্থার কথা উল্লেখ থাকলেও সেটা কী তা বলা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্যতা, স্বীকৃতি/অধিভুক্তি, জনবলকাঠামোর আরোপিত শর্ত, কাম্য শিক্ষার্থী-ফলাফল, পরিচালনা কমিটি না থাকলে এমপিও দেয়া হবে না। এনটিআরসিএ’র মেধাতালিকা থেকে নিয়োগ না দিলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এমপিও পাবেন না।
নীতিমালা অনুযায়ী, এমপিওভুক্ত শিক্ষকের বার্ষিক কাজের মূল্যায়ন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সামঞ্জস্য রক্ষা করা হবে। প্রত্যেক শিক্ষকের নিজ মূল বিষয়ের বাইরে আরও ২টি বিষয়ে পাঠদানের দক্ষতা থাকতে হবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়, যেসব প্রতিষ্ঠানে শিফট চালু আছে, সেগুলোয় প্রতি শিফটের একেক শ্রেণীতে কমপক্ষে ১৫০ জন করে ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে। ১৫০ জন বা এর অধিক শিক্ষার্থী থাকলেই শুধু শিফট চালু থাকবে। এ নীতিমালা জারির পর কোনো প্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় শিফট খোলা যাবে না। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদিত মূল ক্যাম্পাস ছাড়া অন্য কোথাও ক্যাম্পাস বা ব্রাঞ্চ খুলতে পারবে না।
কোনো প্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ করলে বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধার শতভাগ (প্রতিষ্ঠানকে) পরিশোধ করতে হবে। ইনডেক্সধারী শিক্ষক-কর্মচারী অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগ দিলে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা গণনাযোগ্য হবে। তবে যোগদানের আগের বকেয়া প্রাপ্য হবেন না। ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তাদের প্রথম নিয়োগকালীন শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রযোজ্য। এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী একাধিক পদে চাকরি বা আর্থিক লাভজনক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাজীবনে শুধু একটি তৃতীয় বিভাগ/সমমান গ্রহণযোগ্য হবে। এ নীতিমালা জারির পর কেউ যদি বকেয়াপ্রাপ্য হন, সে ক্ষেত্রে তা পরিশোধ করা হবে না।শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মহিলা কোটা পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুসরণ করতে হবে।
দৈনিকশিক্ষা