ডেস্ক,১৯ সেপ্টেম্বর:
ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জের লোভনীয় দামে পণ্য কেনার ফাঁদে আটকে যাওয়া টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লাখ লাখ গ্রাহক। কোথায় গেলে কিভাবে টাকা পাবেন, সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তারা।
আইনজ্ঞরা বলছেন, ফৌজদারি ও দেওয়ানি- দুই ধরনের আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন প্রতারিত গ্রাহকরা। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় টাকা ফেরত পেতে দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
আরো পড়ুন: ইভ্যালির জরুরি নোটিশ
গত বৃহস্পতিবার গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল এবং তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ এখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি (১৭ আগস্ট) ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া মেহজাবিনসহ প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। তারা এখন কারাগারে রয়েছেন। ইভ্যালি ও ই-অরেঞ্জ দুটি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই আটকে যাওয়া টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকরা।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতারিত ব্যক্তি ফৌজদারি আইনের পাশাপাশি দেওয়ানি কার্যবিধি অনুযায়ী টাকা আদায়ের জন্য দেওয়ানি আদালতে মানি মোকদ্দমা করতে পারেন। বাদী যদি তার দাবি আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হন, তাহলে আদালত বাদীর পক্ষে ডিক্রি দেন।
রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার মতে, মানি মোকদ্দমা নিষ্পত্তি একটা লম্বা আইনি প্রক্রিয়া। কারণ বাদী মামলা করলে বিবাদীপক্ষ সব সময় তৎপর থাকেন, কীভাবে মামলা ঝুলিয়ে রাখা যায়। তবে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে ‘মানি মোকদ্দমাই’ একমাত্র আইনি সমাধান।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, প্রতারণার মাধ্যমে যেসব কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে নেয়া টাকায় অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে, সেসব সম্পত্তি নিলামে বিক্রি করে মানুষের টাকা মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিলে সবচেয়ে ভালো হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতারক কোম্পানির সম্পত্তি ক্রোক করে তা বিক্রির জন্য আলাদা বিধান করা উচিত। বিদ্যমান আইনে কোনো মামলার আসামি দণ্ডিত হওয়ার পর সম্পত্তি ক্রোকের বিধান রয়েছে। এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।
এর আগে ডেসটিনি, ইউনিপে-টু, যুবক নামে প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় ফাঁদে আটকা পড়েন হাজার হাজার গ্রাহক। এখনো গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাননি। টাকা না পেয়ে অনেক গ্রাহক পথে বসে গেছেন। এসব ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষ এবং ব্যক্তির পক্ষ থেকেও ফৌজদারি মামলা হয়েছে। সেসব মামলার বেশির ভাগ বিচারাধীন।