আমার নয়, আটক নিরপরাধ শিক্ষার্থীর খোঁজ নিন : ঢাবি শিক্ষক

Image

রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি থেকে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোক প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক শেহরীন আমিন ভুঁইয়া। এ ঘটনায় অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন। তবে তার ব্যাপারে খোঁজ না নিয়ে আটক ওই শিক্ষার্থীর খোঁজখবর নিতে শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাবির এ শিক্ষক।

বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে শুভাকাঙ্ক্ষীদের এ অনুরোধ জানান তিনি।

পোস্টে শেহরীন আমিন লিখেছেন, শিক্ষার্থী, সহকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অসংখ্য কল পাচ্ছি। আমি ক্ষমা চাইছি, কারণ সবার ফোন কল রিসিভ করতে পারছি না। আজকের ঘটনাটি হঠাৎ ঘটেছে এবং আমি এখনো হতবিহ্বল।

আরো পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর মাধ্যমিকের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত

তিনি লেখেন, তবে আমি বেশি দুশ্চিন্তায় রয়েছি ওই নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে নিয়ে, যাকে আমি তাদের হাত থেকে ফিরিয়ে আনতে পারিনি। যদি সম্ভব হয় দয়া করে তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেন। বর্তমানে সে কোথায় আছে এবং তার অবস্থা কেমন?

এর আগে, দুপুরে ঢাবির দোয়েল চত্বরে ছাত্র-শিক্ষকদের সম্মিলিত সমাবেশে এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ জোরপূর্বক আটক করতে চাইলে বাধা দেন শেহরীন আমিন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ধাক্কা দিলে তিনি পড়ে গিয়ে আহত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষক শেহরিন ম্যাম পুলিশের আক্রমণে আহত হয়েছেন। দোয়েল চত্বর ও হাইকোর্টের মাঝামাঝি জায়গায় এক শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় নুসরাত ম্যাম ও শেহরিন ম্যাম বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে তর্ক-বির্তক চলতে থাকে। এ সময় এক পুলিশ সদস্য জোরপূর্বক শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করে এবং ম্যামের হাত মোচড় দিয়ে ছেলেটিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে ম্যামকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং ম্যাম আহত হন। ম্যাম হাতে, হাঁটুতে ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন। ধস্তাধস্তি করে পুলিশ ছেলেটিকে ধরে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুর সাড়ে ১২টা থেকেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্টের দিকে মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। এ সময় শিশু একাডেমির সামনে বেরিকেট দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে পৌনে একটার দিকে দুজন শিক্ষার্থীকে আটক করে প্রিজনভ্যানে তোলে পুলিশ। পরে আইনজীবী, শিক্ষক, অভিভাবক ও মানবাধিকার কর্মীরা পুলিশের গাড়ি আটকে আটককৃত দুজনকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান কালবেলাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের সঙ্গে আজ আমাদের সংহতি জানানোর কর্মসূচি ছিল। কিন্তু পুলিশের বাধায় আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারিনি। তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা সংহতি জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সব কর্মসূচিতে আমাদের সমর্থন থাকবে।

এর আগে, গতকাল (৩০ জুলাই) ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।