ডেস্ক: শিশু চায় উড়তে। শিশু চায় ঘুরতে। শিশু তার নিজের মতো খেলতে চায় সারাদিন। কিন্তু তার মাঝেই শিশুকে একটু একটু করে শেখাতে হয় দায়িত্ব। বুঝিয়ে দিতে হয় খেলাধুলা, পড়াশোনা, হাসি কান্নার বাইরেও জীবনের প্রয়োজনে জীবনের কিছু কর্তব্য থাকে।আজকে যে শিশু সে হয়তো বুঝবে না দায়, দায়িত্ব, কর্তব্য কি; কিন্তু আজ শিশুটি যা দেখল বা শুনল তা একদিন তার কানে বাজবে, চোখে ভাসবে। সবটুকু মনে না থাকলেও সামান্য হয়তো টুকে নেবে তার মন। আর সামান্য সামান্য হতে হতে বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে আদব কায়দায়, দায় দায়িত্বে একদিন হয়তো পূর্ণ হবে আজকের শিশুটি।
শিশুরা পরিবার থেকেই সবচেয়ে’ বেশি শেখে। পরিবারই শিশুর মস্তিষ্ক গড়ার প্রথম এবং প্রধান কারিগর। তাই পরিবারকেই জানতে হবে শিশুটির কী প্রয়োজন। শিশুটিকে কীভাবে বড় করা দরকার। সময়ের সঙ্গে আগামীর কথা ভেবে পরিবারকেই পাঠদান করাতে হবে সুষ্ঠু ও সচেতনভাবে। মনে রাখতে হবে অভিভাবক ও পরিবারই শিশুর স্কুল। তার বাইরে আর কিছু নেই। ভালো ভালো বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় জীবিকার পথ বাতলে দেবে, পরিবারই দেবে জীবনের পথ নির্দেশনা। বলে দেবে তিল থেকে তাল হয়, ক থেকে হয় কোকিল।শিশুকে যা শেখাতে চান তা হয়তো একদিনে হবে না। একদিনে কোনোকিছুই হয় না। একটি চর্চার মধ্যদিয়ে একটু একটু করেই সমৃদ্ধ হয় পৃথিবীর সবাই। তাই অধৈর্য বা বিরক্ত না হয়ে শিশুকে যেন সময় দেই আমরা। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন চোখ রাখি সে কী করছে, কী দেখছে ও কী শিখছে। প্রতিদিন একটি একটি বিষয় যদি তার সামনে আলোচনা করি, তাকে দেখাই সেখান থেকে একটু একটু করেই সে গ্রহণ করবে।
কীভাবে শিশুকে দায়িত্ব নিতে শেখাবেন? –
- ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন। দেখুন শিশুটি কাজ করতে আগ্রহী কিনা।
- তার কাজ তাকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করুন।
- কাজে অভ্যস্ত হয়ে গেলে অনেক কাজে তাকে এগিয়ে দিন টেকনিক্যালি।
- উপদেশ শিশুরা বেশি নিতে পারে না। উপদেশ বা মুখে মুখে শেখানোর চেয়ে প্র্যাকটিক্যালি শেখান, যেন সে বুঝতে না পারে যে আপনি তাকে শেখানোর চেষ্টা করছেন।
- তার বই-খাতা স্কুল ব্যাগটি তাকে দিয়ে রেডি করান। গুছিয়ে রাখতে শেখান। ঘরের ছোট একটি কাজের দায়িত্ব তার কাছে দিয়ে দিন এবং তার কাছে বিষয়টির খোঁজ নিন প্রতিদিন। বিষয়টিতে যেন সে আনন্দ পায় তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- বাসায় অতিথি আসলে তাকে এগিয়ে দিন রিসিভ করার জন্য। কোনো ত্রুটি থাকলে পরে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিন।
- অপরিচিতদের সঙ্গে তাকে পরিচয় ও কথা বলার সুযোগ দিন।
- কোথাও বেড়াতে গেলে তার উপর একটি দায়িত্ব দিতে পারেন। প্রথম প্রথম ভুল কিছু হবেই। ভুল করতে করেতেই ঠিক হয়ে যাবে সে।
- স্কুলে টিচারদের সঙ্গে আলাপ পরিচয় করিয়ে দিলে এবং প্রতিদিন হায়-হ্যালো করতে শেখালে তার সংকোচ দূর হবে এবং বড় জায়গায় কথা বলার জড়তা কাটবে। সে অনায়াসে কাজ করতে পারবে।
- বিদ্যালয়ের যে কোনো অনুষ্ঠানে তাকে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত করুন এবং সেখানে কিছু করার সুযোগ তৈরি করে দিন।
- বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিন। গঠনমূলক কাজে এগিয়ে দিন ও সাহস জোগান।
- পাঠ্যবইয়ের বাইরে প্রতিদিন দৈনিক পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রসঙ্গের বই পড়তে অভ্যস্ত করে তুলন। একটি বই পারে একটি মানুষকে অনেক মানুষের চরিত্র সম্পর্কে জানাতে। পড়া ও জানার বিকল্প কিছু নেই।
- নি এম