আঙুলহীন এইস,এস,সি পরীক্ষার্থী

মোঃ ইউনুস আলী, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

দুই হাতে আঙুল নেই, তাতে কি হয়েছে। মনের ইচ্ছাশক্তি আর আগ্রহ তো আছে। তাই চেষ্টা করলেই উপায় হয় আর উপায় পেলে জীবনে সফল হওয়া যায়। অন্য ১০০জন যা পারেন না তাই করে দেখিয়ে দিচ্ছেন প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্র রুবেল মিয়া। সে এবারে এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

সোমবার (২রা এপ্রিল) লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা উত্তরবাংলা ডিগ্রী কলেজের এইচ,এস,সি পরীক্ষা কেন্দ্রে দেখা মেলে তার। সে ঐ কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক বিএম শাখার ছাত্র।

দায়িত্ব থাকালীন কালীগঞ্জ উপজেলা (পিআইও) কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, রুবেল মিয়া অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র।
তার দুই হাতে আঙুল নেই তবুও তার হাতের লেখা চমৎকার। বাংলা পরীক্ষায় খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েছে ছেলেটি।

কাকিনা মহিমা রঞ্জন স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্র পরিদর্শনকালে বিষয়টি আমার দৃষ্টিতে আসলে আমি কিছুক্ষণ তার পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি ছেলেটির হাতের লেখা অত্যন্ত চমৎকার। পরীক্ষাও দিচ্ছে খুব ভালো।

উপজেলা (পিআইও) কর্মকর্তা আরও জানান, শুধু একজন মেধাবী ছাত্রই নয় রুবেল মিয়া। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি কম্পিউটার ও লন্ডির ব্যবসাও করেন।

রুবেল মিয়া জানায়, পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। দুই হাতের আঙুল না থাকলেও লিখতে আমার কষ্ট হয় না। এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি। আশা করছি সবগুলো পরীক্ষা ভালো হবে এবং সেই সঙ্গে পরীক্ষার ফলাফলও খুব ভালো হবে।

উত্তরবাংলা ডিগ্রী কলেজের উপঅধ্যক্ষ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, রুবেল প্রতিবন্ধী হলেও তার মেধা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি। তার হাতের লেখাও ভাল। সে তার পঙ্গু হাত দিয়ে লেখার পাশাপাশি সব ধরনের খেলাধুলা, বাই সাইকেল চালানো ছাড়াও অন্যান্য কাজ নিজে করতে পারে।

রুবেলের মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার পাঁচ সদস্যের পরিবারে রুবেল দ্বিতীয় ছেলে। রুবেলের বাবা সুকানদিঘী বাজারে কাপড় লন্ডি করতেন। তার বাবার মৃত্যুর পর তাকে এই ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি চালাতে হয়। যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার চালাতেই কষ্ট হয়। তার সঙ্গে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতে কষ্ট হয়।

রুবেলের মা আরও বলেন, আমার আরেকটি বড় মেয়ে আছে ঢাকায় থাকে। সে একটি গার্মেন্টসে চাকিরি করেন মাসে অল্প কিছু পাঠান। এ দিয়ে কোন মতো সংসার চালাতে হয়।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।