ডেস্ক,২৩ জুন: অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগের প্রাথমিক বাছাই (প্রিলিমিনারি) পরীক্ষার ফলাফলে ‘ভুল’ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন হাজারো প্রার্থী। তাঁদের অভিযোগ, বি সেটে যাঁরা পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই ৬৫ থেকে ৭৫ পর্যন্ত পেয়েও উত্তীর্ণ হননি। অথচ এ সেটে ৬০ থেকে ৬৫ পেয়েও অনেকে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
প্রায় দুই লাখ পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছিলেন। প্রথম দফায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে বাতিল হওয়ার পর গত ৯ জুন ফের এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার এই ফল প্রকাশ করা হয়। এতে প্রকাশিত ফলে ৮ হাজার ১৯২ জন উত্তীর্ণ হন। ১৪ জুলাই লিখিত পরীক্ষা হবে।
তবে দুপুরে ফল প্রকাশের পর তিন থেকে চার শ প্রার্থী কাছে অভিযোগ করেছেন ফল প্রকাশে কোথায় ভুল হয়েছে। তাঁরা শুনতে পাচ্ছেন ৫৮ কাট মার্কস। কিন্তু বি সেটে ৬০ থেকে ৭৫ পেয়েও অনেকের হয়নি। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপেও তিন থেকে চার হাজার প্রার্থী এই ফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতক করা আশিক আহমেদ বলেন, ‘আমি বি সেটে পরীক্ষা দিয়েছি। অন্তত ৮০-র মতো পাব। কিন্তু আমি টিকিনি। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, কোথাও কোনো ভুল হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে সেই ভুল সংশোধনের অনুরোধ করছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করা রবিউল ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি ৭৪-এর মতো পাবেন। কিন্তু সুযোগ পাননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রকিব হাসান বলেছেন, বিজ্ঞানের ছাত্ররা সাধারণ অঙ্কে ভালো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে বি সেটে পরীক্ষা দিয়ে একজনও টেকেনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র নবিউল হক বলেছেন, তিনি ৬৫ পাবেন। সুযোগ পাননি।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থী রুমন প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র কৃষ্ণ সাহা, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবাজি বিশ্বাস, কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মোস্তফা আজাদ, ঢাকা বিশ্বিবদ্যায়লের ফিন্যান্স বিভাগের সৌরভ চৌধুরীসহ আরও অন্তত ৩০০ জন একই অভিযোগ করেছেন।
ফেসবুকে চাকরির বিভিন্ন গ্রুপে হাজারও প্রার্থী বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছেন। তাদের সবার দাবি, পরীক্ষার্থীরা বলছেন, ওএমআর শিটে পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল দেখা হয়েছে কম্পিউটারে। সেখানে নিশ্চয়ই কোনো ভুল হয়েছে। বি সেটে যে উত্তর ধরে খাতা মূল্যায়ন করা হয়েছে, তাতে কোথাও ভুল হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগ অগ্রণী ব্যাংকের এই পরীক্ষা নেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিল। এই ভুলের বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের বর্তমান ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষার পরদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির কাছে ফল পাঠিয়ে দিয়েছে। তারাই কাট মার্কস নির্ধারণ করে ফল প্রকাশ করেছে। ওএমআর খাতা মূল্যায়ন করেছে কম্পিউটার। এমন ভুল হওয়ার কথা নয়। তবে ছেলেমেয়েদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তারা ম্যানুয়ালি খাতা মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে পারে।’