দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) সংবাদদাতা :দেশের সর্ববৃহত্ দর্শনা কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের প্রথম জৈবসার উত্পাদন কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। ৭৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত দর্শনা কেরু চিনিকলের বর্জ্য পদার্থ মাথাভাঙ্গা নদী ও এলাকার পরিবেশ দূষণ করে আসছিল বলে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগ ছিল। সে সময় পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষায় কর্তৃপক্ষ নানা ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করেছিল। পরে সে বর্জ্য পদার্থ দিয়েই এখন তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব জৈবসার। এ উদ্যোগে সফল হয়েছে কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এলাকার চাহিদা ও জমির উর্বর ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা ভেবেই প্রতিষ্ঠা করেছে জৈবসার উত্পাদন কারখানা। কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে জৈবসার কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য বরাদ্দ দেয় ৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। দর্শনার আকুন্দবাড়িয়া বীজ উত্পাদন খামারের নিজস্ব জমির ওপর সার কারখানা নির্মাণ কাজ শুরু করে। চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় দ্রুত নির্মাণ কাজ সমপন্ন এবং ভারতের টরিক চিম টেকনো লিগাল সার্ভিস প্রা. লিমিটেডের কারিগরি সহায়তায় মেশিনারিজ স্থাপন করে। ২০১৩ সালের মে মাসে সার কারখানায় পরীক্ষামূলক উত্পাদন শুরু করা হয়। জানা গেছে, এ কারখানায় বছরে ৯ হাজার মেট্রিক টন জৈবসার উত্পাদন করতে পারবে। এ সার তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে চিনি কারখানার উপজাত প্রেসমাড ও ডিস্টিলারি কারখানার বর্জ্য পানি। কাঁচামাল হিসেবে প্রতিবছর ১৮ হাজার মেট্রিক টন প্রেসমাড ও ৪০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্যপন্টওয়াস ব্যবহার করা যাবে। কেরুজ চিনিকল থেকেই প্রেসমার্ড পাওয়া যাবে ২ হাজার মেট্রিক টন, বাকি প্রেসমাড দেশের অন্যান্য চিনি কারখানা থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এ দুটি বর্জ্য সার কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে অ্যারোবিক কম্পোসটিং পদ্ধতিতে পরিবেশবান্ধব জৈবসার উত্পাদন করা হচ্ছে। ইতিপূর্বের পরিবেশ দূর্ষণের কারণে এ বর্জ্য ফেলে দেয়া হতো মাথাভাঙ্গা নদীতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে হ্রাস পাবে জমির উর্বরতা। এ বিষয়ে চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজিজুল হক বলেন, প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠা পায় জৈবসার কারখানা। এ ছাড়া চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগর ইতিমধ্যেই মিলের আধুনিকায়নে সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন।