নেত্রকনা প্রতিনিধি: নবম শ্রেণির ছাত্রী দীপ্তি রাণী বিশ্বশর্মা। গত ১৬ জুলাই প্রতিদিনের মতো বিদ্যালয়ে গিয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। দীপ্তি নিখোঁজ হওয়ার খবরে পাগলপ্রায় হয়ে পড়ে তার মা-বাবা। একমাত্র স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার পরিবার ও স্বজনরা। কিন্তু দীপ্তির কোনো সন্ধান করতে পারেননি।
অবশেষে পরিবারের লোকজন বুঝতে পারেন, দীপ্তিকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে নিখোঁজের পরদিন ১৭ জুলাই ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে দীপ্তির এক সহপাঠী ও তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার ঘটনা এটি। এ ঘটনায় ৫দিন পেরিয়ে গেলেও ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে শনিবার সন্ধ্যায় কেন্দুয়া থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, স্কুলছাত্রী দীপ্তিকে উদ্ধারের জন্য সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরইমধ্যে মামলার আসামি কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া গ্রামের মনোরঞ্জন বর্মণের ছেলে সুজিত বর্মণ (২৫) কে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত সুজিত বর্মণ, তার ভাই প্রদীপ বর্মণ ও বোন মনি রাণী বর্মণসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের ভটেরগাতী পাড়াদুর্গাপুর গ্রামের শিরীষ বিশ্ব শর্মা বাদি হয়ে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, দীপ্তি রাণী বিশ্ব শর্মা স্থানীয় আশুজিয়া জেএনসি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল।
এ বিষয়ে স্কুলছাত্রী দীপ্তির বাবা শিরীষ বিশ্ব শর্মার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার একমাত্র সন্তান দীপ্তি। অনেক স্বপ্ন নিয়ে কষ্ট করে মেয়েটিকে লেখাপড়া করাচ্ছিলাম। স্বপ্ন ছিল সে লেখাপড়া করে একদিন অনেক বড় হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হবে বলে মনে হচ্ছে না। কোনো ছেলের সাথে প্রেমের কোনো সম্পর্ক এবং দীপ্তি খুবই সহজ-সরল মেয়ে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৬ জুলাই সে যথারীতি বিদ্যালয়ে যায়। পরে সে আর বাড়ি ফিরেনি। তবে বিদ্যালয়ে খোঁজ নিলে দীপ্তি টিফিনের সময় বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায় বলে তারা (বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ) দীপ্তির বাবাকে জানান।
কিছুদিন আগে দীপ্তির মোবাইলে আসা একটি মিসকলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহপাঠী মনি রাণী বর্মণের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয় জানিয়ে শিরীষ বিশ্ব শর্মা বলেন, এ ঘটনায় মনি রাণীর দুই ভাই প্রদীপ বর্মণ ও সুজিত বর্মণ আমার মেয়েকে নানা রকম হুমকিসহ ভয়ভীতি দেখায়। এ জন্য কিছুদিন দীপ্তি স্কুলে যাওয়াও বন্ধ রাখে। বিরোধের জেরে তারাই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দীপ্তিকে অপহরণ করেছে।