নিজস্ব প্রতিবেদক,১৭ জুন: চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদ এবং নিরাপদ কর্মস্থলের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারাদেশে ২৪ ঘণ্টা প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ থাকবে। রোববার (১৮ জুন) সকাল ৬টা থেকে পরদিন (১৯ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত টানা ২৪ ঘণ্টা এ কর্মসূচি পালন করবেন চিকিৎসকরা। তবে ওই সময় সব ধরনের জরুরি চিকিৎসা অব্যাহত রাখা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।
গত ২৮ মে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভাঙচুর, চিকিৎসকদের মারধর এবং অবহেলায় রোগীর মৃত্যু অভিযোগে নয় জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে রোগী মৃত্যুর ঘটনা চিকিৎসকের অবহেলায় হয়েছে বলে ঢালাও অভিযোগ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিএমএ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল সকাল থেকে সারাদেশে ২৪ ঘণ্টা প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখা হবে। তবে ওই সময়ে জরুরি চিকিৎসা চলবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ মে রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আফিয়ার জাহিন চৈতির মৃত্যুর অভিযোগ এনে সেন্ট্রাল হাসপাতাল ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন ১৮ মে সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনায় চিকিৎসকদের দায়ি করে ধানমন্ডি থানায় মামলা দায়ের করেন ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক এম আমজাদ আলী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) মেডিক্যাল অনুষদের ডিন ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহকে এক নম্বর আসামি করে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। এর পরপরই সেন্ট্রাল হাসপাতালের পরিচালক ডা. এম এ কাশেম ও ডা. সাজিদ হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালত থেকে জামিন নেন তারা।
এসব ঘটনায় এর আগে গত ২৩ মে সারাদেশে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার কর্মসূচি দেয় বিএমএ। এছাড়া গত ২১ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত চিকিৎসকরা কর্মক্ষেত্রে কালো ব্যাজ ধারণ করেন। দুই দফা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে বিএমএ। এসব কর্মসূচি চলাকালে গত ২৪ মে সেন্ট্রাল হাসপাতাল ও ঢাবি কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতার পর উভয় পক্ষ পরস্পরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারে সম্মত হয়।
তবে এই সমঝোতার বিষয়টি সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনকে অবহিত না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংগঠনের নেতারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ রাখার কর্মসূচি অব্যাহত রাখে বিএমএ।
গত ২৫ মে বিএমএ’র এক মানববন্ধনে সংগঠনটির মহাসচিব বলেন, ‘কারও সঙ্গে আলোচনা না করে সমঝোতা করার মাধ্যমে চিকিৎসকদের সঙ্গে বেঈমানি করেছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল।’