ডেক্স : ২৩ এপ্রিল : অবশেষে সরকার নির্ধারিত মূল্যে রোগীদের হার্টের রিং দেওয়া শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীরা সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে হার্টের রিং পেয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হার্টের রিং নিয়ে নৈরাজ্যের অবসান হলো। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে।
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কাউকে রিং বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। আজ রোববার থেকে যেসব সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মোড়কে রিংয়ের নিবন্ধন, মূল্য, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ না থাকবে, তাদের রিং বিক্রি করা যাবে না। জনস্বার্থে নৈরাজ্য বন্ধে সবকিছু করা হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শরীয়তপুরের একরামুল হক বলেন, গত সপ্তাহে এনজিওগ্রাম করানোর পর তার হার্টের ব্লক ধরা পড়ে। দুটি রিং পরানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। ওই রিংয়ের মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এত টাকা না থাকায় তিনি রিং নিতে পারেননি। কিন্তু আজ (শনিবার) সেই রিং প্রায় অর্ধেক মূল্যে পেয়েছি। এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে সরকারকে তিনি ধন্যবাদ জানান। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা অন্তত ২০ জন সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হার্টের রিংয়ের মূল্যের বিষয়টি নিয়মিত মনিটরিং করার জন্য সরকারের প্রতি তারা আহ্বান জানিয়েছেন।
হার্টের রিংয়ের মূল্য নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। ১৭ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে হার্টের রিংয়ের সর্বোচ্চ খূচরা মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ওই মূল্য তালিকা ইতিমধ্যে সব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, রিংয়ের ৪১ আইটেমের মূল্য তালিকা নির্ধারণ করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই তালিকা হাসপাতালের দৃশ্যমান জায়গায় সাঁটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রিংয়ের মূল্যের বিষয়ে পরিচালক বলেন, হার্টের রিং আমদানি করতে কোনো শুল্ক দিতে হয় না। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ১ টাকার কোনো পণ্য কিনলে তা ১ দশমিক ৫ গুণ বেশি মূল্যে বিক্রি করতে পারবে। এভাবেই ৪১ আইটেমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
রিং আমদানিকারকদের সংগঠন মেডিকেল ডিভাইসেস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে তারা সব হাসপাতালে রিং সরবরাহ করেছেন। তবে তিনি মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তা না হলে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বেন। আজ রোববার সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে তারা এ বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানান।