নিজস্ব প্রতিবেদক,১৪ এপ্রিল : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশিক্ষার্থী নুরুজ্জামান নিভৃত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় শোভাযাত্রা বাতিল করছে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগ শনাক্ত করতে না পাড়ায় সাভারের এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার রাস্তায় শনিবার রাত ১০টার দিকে ইংরেজি বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের এ শিক্ষার্থী মারা যান।
আজ বর্ষবণের বিভিন্ন আয়োজন থাকলেও নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের অনুষ্ঠানে গান-বাজনা বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে কলা ও মানবিক অনুষদ বর্ষবরণর বিভিন্ন আয়োজন থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসকরা জানান, বুকে ও পেটে ব্যথা নিয়ে নুরুজ্জামান সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসা কেন্দ্রে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. তরিকুল ইসলাম তাকে গ্যাস্ট্রিকের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এতে ব্যথা না কমলে তাকে সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পরে রাতে সোয়া নয়টার দিকে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথেই তার মৃত্যু হয়।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হরনাথ সরকার বলেন, ‘শ্বাসকষ্ট থেকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নুরুজ্জামানের মৃত্যু হয়।’।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকন্দ্রে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির দাবিতে শহীদ মিনারের পাদদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে পাঁচ শিক্ষার্থী। পরে বেলা ১টায় একই দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে মৌন মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে যায় এবং সেখানে ৪ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবিগুলো হলো নিভৃতের মৃত্যুর তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বাস্তবায়ন করতে হবে, রোগীকে বাইরের হাসপাতালে রেফার করলে প্রশাসনকে এর ব্যয়ভার বহন করতে হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিকিৎসাকেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি নিয়ে দাবি তুলেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা লিখেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল, এম্বুলেন্সযোগে পাঠাতে দেরি না হলে আর এম্বুল্যান্সে লাইফ সেভিং উপকরণ থাকলে অন্যরকম হতে পারত সব! এই আমাদের নববর্ষ! শুভ নববর্ষ!’