গাংনী প্রতিনিধি: আমান উল্লাহ। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কাঁপানো একজন মেধাবী ছাত্র। শুধু লেখাপড়ায় নয়, সামাজিক কাজের সাথেও জড়িত ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছে’ নামের একটি সামাজিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। জোড়পুকুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের গন্ডি পেরিয়েছেন মেধার পরিচয় দিয়ে। স্বপ্ন ছিলো বড় অর্থনীতিবিদ হবেন। গত ২৯ মে তিনি ফেসবুকে স্টাটাস দিয়েছিলেন ‘অতঃপর গৃহাভিমুকে রওনা হইলাম….’। বাড়িও এসেছিলেন। পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে। কিন্তু ঈদের দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শ্যালোইঞ্জিন চালিত অবৈধযান আলগামনের সাথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে একটি পরিবারের ঈদ আনন্দ, ভবিষ্যত স্বপ্ন ও একজন মেধাবীকে। আমান উল্লাহর ফেসবুক বন্ধু রাসিদুল ইসলাম ওই স্টাটাসে লিখেছেন ‘ভাই, তুমি কোন বাড়ির উদ্দেশ্যে যে রওনা দিলে’। ভোমরদহ গ্রামের ক্ষণজন্ম এই আমান উল্লাহর মৃত্যুতে পরিবারে এখনো শোকের মাতম বইছে। আত্মীয়স্বজন, সহপাঠী, প্রতিবেশীসহ পরিচিতজনরাও শোকে কাতর। তার এভাবে চলে যাওয়া ভুলতে পারছেন না স্বজনরা। আমান উল্লাহ (২১) মেহেরপুর গাংনী উপজেলার ভোমরদহ গ্রামের মহির উদ্দীনের ছেলে ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
জানা গেছে, ঈদের দিন দুুপুরের দিকে আমান উল্লাহ ঈদের দিন তার ভগ্নিপতি মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য’র পিএস সাইফুজ্জামান সিপুর পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে গাংনী থেকে গ্রামের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক দিয়ে গাংনী উত্তরপাড়া অতিক্রম করার সময় একটি আলগামনের সাথে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন। আলগামন তার গায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কুষ্টিয়া মেডিকেলে ভর্তির কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আমান উল্লাহ। হাসপাতার থেকে মরদেহ নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া হয়। রাতে গ্রাম্য কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, তবে এ ঘটনায় পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। নসিমনটি শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে।