বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখাসহ বেশকিছু দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৩১ মার্চ) সকাল ৭টা থেকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি থাকলেও তারা এটি স্থগিত ঘোষণা করেছেন। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা।
এর আগে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রবেশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল ৭টায় তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। এদিন তারা দাবি বাস্তবায়নে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
আরো পড়ুন: বুয়েট শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বর্জন ,পরীক্ষার্থী শূন্য হল
রবিবার সকালে বুয়েটের আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত থাকলে দাবি আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলমান রয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাল্টা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। সেটাও তারা পর্যবেক্ষণ করছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সার্বিক অবস্থান জানান দিতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন। এদিন দুপুরের পরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
২০১৯ সালের অক্টোবরে আবরার ফাহাদ হত্যার পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। তবে গত বছর বুয়েট শিক্ষার্থীদের পদ দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হলে বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনা তৈরি হয়। তখন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পুরোনো বিজ্ঞপ্তিটি আবার ওয়েবসাইটে প্রচার করা হয়।
গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তারা বলছেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরও বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালায়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে গতকাল বিকেলে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি বুয়েট প্রশাসনকে লিখিত আকারে জানান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বুধবার মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে “বহিরাগতদের” প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ইমতিয়াজ হোসেন।
ইমতিয়াজকে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, হলের সিট বাতিলসহ তার সহযোগীদেরও বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারেরও দাবি শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে দিচ্ছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের (ডিএসডব্লিউ) পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা। এসব দাবি আদায়ে শনি ও রবিবারের (৩০ ও ৩১ মার্চ) পরীক্ষাসহ সব অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।