তাই তিনি অর্থমন্ত্রী হলে ষোলকলা পূর্ণ হবে। দেশ যেমন পাবে দক্ষ অর্থমন্ত্রী, তেমনি সিলেট থেকেই অর্থমন্ত্রী হওয়ার ধারাবাহিকতাও বজায় থাকল। ড. ফরাসউদ্দিন অর্থমন্ত্রী হতে পারেন-এমন আলোচনা বেশি হচ্ছে ঢাকায় বসবাসরত সিলেটের মানুষের মধ্যে। কিছু রাজনীতিবিদ এবং অর্থনীতবিদও এমন আলোচনা করছেন। একাধিক রাজনৈতিক নেতা ও অর্থনীতিবিদ নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার সংবাদকে বলেন, ড. ফরাসউদ্দিনের গ্রহণযোগ্যতা অনেক। তাছাড়া তার ব্যক্তিগত ইমেজও ক্লিন। গতবছর দেশের ইতিহাসে ব্যাংকিং খাতে সবথেকে আলোচিত ঘটনা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির তদন্তভারও ছিল তার উপর এবং তিনি অত্যন্ত মুন্সিয়ানা দেখিয়েই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন সরকারের কাছে। এছাড়াও অর্থনীতি বিষয়ে বড় বিপর্যয় বা দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হলে অনেক ক্ষেত্রেই নেতৃত্বে থাকেন ফরাসউদ্দিন।
সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতাও দিগুণ হয়েছে তার প্রতিবেদনের আলোকে। তিনি পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে ছিলেন। তাছাড়া পরবর্তী অর্থমন্ত্রী হিসেবে সিলেটে তার বিকল্প আর কোনো অর্থনীতিবিদ আপাতত দেখা যাচ্ছে না। বড় বড় অর্থনীতিবিদ থাকলেও ফরাসউদ্দিনের মতো ততটা পরিচিত নন তারা। অনেকের ধারণা সিলেটের বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া ও এম সাইফুর রহমানের বিকল্প হতে পারেন একমাত্র ড. ফরাসউদ্দিনই। জানা গেছে অর্থনীতি বিষয়ে অধিক যোগ্যতা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সিলেট এগিয়ে থাকার কারণেই স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় সব সরকারই সিলেট থেকে অর্থমন্ত্রী বেছে নিয়েছেন। অন্য জেলা থেকে খুব কমই অর্থমন্ত্রী হওয়ার নজির রয়েছে। বিএনপির হয়ে দেশের ইতিহাসে বেশি বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান।
তবে একটানা বেশি বাজেট দিয়েছেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তিনি এরশাদ সরকারের আমলেও একাধিক বাজেট দিয়েছেন। বিশিষ্টজনরা বলছেন, এই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের মতো ফরাসউদ্দিনেরও রয়েছে মেধা, অর্থনীতি বিষয়ে পা-িত্য ও বর্ণাঢ্য জীবন। ১৯৪২ সালের ১৮ এপ্রিল ফরাসউদ্দিনের জন্ম। অর্থনীতিতে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। যদিও এসএসসি এবং এইচএসসিতে তিনি বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন।
ফরাসউদ্দিন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সোনালী ব্যাংক ও পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান (এই পদ থেকেই ড. ফখরুদ্দীন আহমদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়েছিলেন), জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর। এছাড়াও অনেক সংস্থা ও কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন এবং আছেন। বর্তমানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তিনি। ছিলেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য।