কানবি প্রতিনিধি : ১৩ মে :ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে একই বিভাগের শিক্ষক প্রভাষক মিনহাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটি পুনর্গঠনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী আগের তদন্ত কমিটি গঠিত না হওয়ায় প্রাথমিক রিপোর্টে কমিটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক এএমএম শামসুর রহমান জানান, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী কোনও শিক্ষকের বিরুদ্ধে নৈতিক অবক্ষয়জনিত অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে সেই কমিটিতে শতকরা ৫০-৬০ শতাংশ সদস্য রাখতে হবে নারীদের। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় পাঁচ সদস্যের গঠিত তদন্ত কমিটিতে মাত্র একজন নারীকে রাখা হয়েছে। এটা কোনভাবেই বিধিসম্মত না। নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য বিধি অনুযায়ী কমিটি পুনর্গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ওই শিক্ষার্থী ত্রিশাল থানায় মামলা করার পর অভিযুক্ত শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি বর্তমানে জেলহাজতে আছেন। জেলহাজতে থাকার পরও ওই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেনি।
কমিটি পুনর্গঠন করার পর তদন্ত কার্যক্রম শুরু করার কথা জানান তদন্ত কমিটির প্রধান।
এদিকে তদন্ত কমিটির কার্যক্রম ধীর গতিতে চলার কারণে বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থী। মামলার ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে গেলেও ওই শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম জানান, নির্যাতিত শিক্ষার্থীর মামলার ঘটনায় শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিন জেলহাজতে গেছেন বিষয়টি তিনি শুনেছেন। কিন্তু এ বিষষে আদালতের কোনও চিঠি এখনও পাননি। আইন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
গত ২ মে নির্যাতিত ওই শিক্ষার্থী বিভাগীয় ডিন ও বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্য বরাবর শিক্ষক মিনহাজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে এবং ওইদিনই সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক এএমএম শামসুর রহমানকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। ৩ মে ওই শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় শিক্ষক মিনহাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। এ মামলায় গত ৭ মে পুলিশ আসামি মিনহাজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান। এরই মধ্যে গত ৭ মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে।