নিজেস্ব প্রতিবেদক : ৩ মে : সারাদেশের প্রায় দেড় লাখ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীর এপ্রিল মাসের এমপিও (বেতন-ভাতার সরকারি অংশ) দেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বিল তৈরি করার দায়িত্ব মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি)। কিন্তু বেতন-বিল তৈরি ও বিতরণ করার মতো লোকবল, সফটওয়ার ও অন্যান্য যোগ্যতা অর্জনের আগেই গত ২৭ এপ্রিল দায়িত্ব নেয় মাদ্রাসা অধিদফতর। যদিও তাদের দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিলে জুলাই মাসে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বেরও ফল এটি।
মাউশি সূত্র জানায়, ৩০ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ভেঙে নতুন দুটি বিভাগ গঠন করা হয়। এর মাধ্যমে ‘মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ’ ও ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ’ যাত্রা শুরু করে। পৃথক মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগ গঠন করা হলেও সারাদেশে এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার দায়িত্ব এতদিন মাউশিরই ছিল। এখন এ দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরকে দেওয়া হলো।
মাদ্রাসা শিক্ষকরা জানান, পর্যাপ্ত ও দক্ষ জনবল নিয়োগ না দিয়েই অনেকটা আকস্মিকভাবে এ দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরকে দেওয়ায় তাদের বেতন-ভাতা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে গেল। চলতি মাসে রমজান শুরু হওয়ার কথা। সঠিক সময়ে বেতন-ভাতা না পেলে শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম বিপাকে পড়বেন।
এদিকে, সঠিক সময়ে মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া সম্ভব হবে কি-না তা নিয়ে মাউশি ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তারাই সন্দিহান। তবে তারা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না।
মাউশির একটি সূত্র জানায়, জুলাই থেকে এ দায়িত্ব মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরকে দেওয়ার কথা ছিল। এর আগেই অনেকটা তড়িঘড়ি করে এ দায়িত্ব তাদের দেওয়া হলো।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মাদ্রাসা অধিদফতর কর্তৃপক্ষ বলছেন তারা এপ্রিলের বেতন থেকেেই কাজ করতে পারবেন। মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দিতে পৃথক বেতনকোড ও বাজেট তৈরি করা হয়েছে।
মাদ্রাসা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: বিল্লাল হোসনে জানান, মঙ্গলবার (২রা এপ্রিল) শিক্ষা অধিদফতরের দুজন পরিচালক ও উপ-পরিচালকের কাছ থেকে তিনি সব বিষয় বুঝে নিয়েছেন।
তবে, অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এবারেও যদি আমাদের সহায়তা না নেয় তবে অনেক ভোগান্তি হবে এপ্রিলের বেতন বিতরণ করতে। মাদ্রাসার ডিজি একগুয়েমি করছেন।
তবে, এমন অভিযোগ মানতে নারাজ মাদ্রাসার মহাপরিচালক।
উল্লেখ্য, সারাদেশে বিভিন্ন স্তরের এমপিওভুক্ত মোট মাদ্রাসা সাত হাজার ৬১৮টি। এগুলোর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখ ৪৮ হাজার ২৪৫। প্রতি মাসে তাদের বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় হয় ২৫০ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার টাকা। এমপিওভুক্তির বাইরেও সরকার স্বীকৃত অনেক মাদ্রাসা রয়েছে।