দুই তরুণীকে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে শাকিল সরদার (২৫) নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাগেরহাটের ফকিরহাটের জারিয়া এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার শাকিল সরদার ফকিরহাট উপজেলার জারিয়া-চৌমাথা এলাকার মোস্তাব সরদারের ছেলে। সে ফকিরহাট কাজী আজহার আলী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি। অন্য আসামি মেহেদী হাসান একই এলাকার শেখ মাসুম হকের ছেলে।
নির্যাতিত ২১ বছর বয়সী এক তরুণী বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। অপর আসামি মেহেদী হাসান (২০) পলাতক রয়েছেন।
আরো পড়ুন: মেডিকেল ভর্তিতে যত আবেদন পড়ল
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে দুই বান্ধবী চাচাতো ভাই ও এক বন্ধুর সঙ্গে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘুরতে যান। পরে সেখান থেকে রাত ১১টার সময় খানজাহান আলী মাজারে যান। বেড়ানোর শেষে আনুমানিক রাত ১২টা ১০ মিনিটে তারা খুলনার দিকে রওনা দেন। পরে ফকিরহাটের জারিয়া চৌমাথা এলাকায় গতিরোধক অতিক্রম করার সময় শাকিল সরদার এক তরুণীর ওড়না টেনে ধরেন।
এতে ওই তরুণী ও তার বন্ধু মোটরসাইকেল থেকে রাস্তার ওপর পড়ে যান। বিষয়টি দেখতে পেয়ে অন্য মোটরসাইকেলের চালক ও তরুণী মোটরসাইকেল থেকে নেমে যান। মোটরসাইকেলের তরুণ-তরুণীরা কোনো কিছু জানতে চাওয়ার আগেই শাকিল ও মেহেদী তাদের মারধর করতে থাকেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, একপর্যায়ে শাকিল ও মেহেদী ওই তরুণীদের পার্শ্ববর্তী স্বপন দেবনাথের চায়ের দোকানের ভেতরে নিয়ে যান। একজনকে চায়ের দোকানের বেঞ্চের ওপর এবং অন্যজনকে পার্শ্ববর্তী প্রশান্ত ব্যানার্জির সেড দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়।
পরে ধর্ষণকারীরা দুই তরুণী ও তরুণদের পার্শ্ববর্তী জারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে নিয়ে যান। সেখানে আবারও ধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে তরুণীদের সঙ্গে থাকা এক তরুণ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
শাকিল ও মেহেদী তরুণ-তরুণীদের কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য হুমকি-ধামকি দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্যে আগে পালিয়ে যাওয়া তরুণ ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশকে জানায়। পরে রোববার (১৪ জানুয়ারি) বাড়ি থেকে তরুণীদের উদ্ধার করা হয়।
ফকিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ধর্ষণের শিকার তুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে শাকিল সরদার নামের একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়ার শেষে শাকিল সরদারকে আদালতের সোপর্দের প্রস্তুতি চলছে। অপর আসামি মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।