এনামুল হক:কিছু কিছু লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের অদ্ভুত একটা ক্ষমতা আছে। তা হলো, আপনা থেকেই পুনর্জন্ম লাভ করা। এই বিস্ময়কর কাজটা তারা কিভাবে সম্পন্ন করে, বিজ্ঞানীরা এখন তা জানতে পেরেছেন। ওরা নিজেদের ডিএনএ-র প্রতিরূপ সৃষ্টি করে পুনর্জন্ম নেয়।
চারণরত প্রাণীরা যেমনÑ গরু, মহিষ বা মেষ লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদের একাংশ হয়তো ছিঁড়ে খেয়ে নেয়। বাকি যে অংশ থাকে, সেটা এক সময় হয়তো মরে যায়। কিন্তু এ ধরনের কিছু উদ্ভিদ তার এই ক্ষতিটা মাত্রাতিরিক্তভাবে পুষিয়ে নেয়। তারা আরও বেশি পরিমাণে উদ্ভিদ পদার্থ তৈরি করে। এবং অন্য সময় যতটা উর্বর হতে পারত, তার চেয়ে বেশি উর্বর হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে এরা আবার নতুন করে জন্মাতে থাকে। সেই পুনর্জন্মের রহস্যটা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন। তাদের এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ‘মলিকুলার ইকোলজি’ নামক একটি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
এই গবেষণার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দেখা গেছে যে, কাটছাঁট হবার পরও একটা উদ্ভিদের নাটকীয়ভাবে ফিরে আসার ক্ষমতাটা একটা প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে, যাকে বলে জেনোম ডুপ্লিকেশন বা জিনের প্রতিরূপ সৃষ্টি। এক্ষেত্রে এক একটি কোষ তার মধ্যকার জিনেটিক উপাদানের সবগুলোর একাধিক প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে।
জেনোমের প্রতরিূপ সৃষ্টি বিজ্ঞানের কাছে নতুন কিছু নয়। গবেষকরা বেশ কয়েক দশক ধরে এই ব্যাপারটি জেনে এসেছেন। তবে ঠিক কী উদ্দেশ্যে এই প্রতিরূপ সৃষ্টি করা হয়, তা নিয়ে খুব সামান্য ক’জনই মাথা ঘামিয়েছেন। আলোচ্য গবেষণাটি যিনি পরিচালনা করেছেন, তিনি ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক কেন পেইজ। তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদÑ আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে এ জাতীয় ৯০ ভাগ উদ্ভিদ তাদের জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টি করে। কেন করে, তা নিয়ে ২০১১ সালে এক গবেষণায় পেইজ ও তার সহযোগী গবেষক ড্যানিয়েল স্কলেস দেখিয়েছেন যে, যেসব উদ্ভিদ দেদারসে জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টি করে চলে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর আবার সবলদেহে ফিরে আসে। গবেষকদের ধারণা, জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উদ্ভিদরা সেই শক্তি লাভ করে থাকে, যা তাদের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন।
গবেষণায় এরাবিডোপসিস থালিয়ানা নামে সরিষা পরিবারের একটি উদ্ভিদের ওপর দৃষ্টি নিবন্ধ করা হয়। দেখা যায়, কিছু কিছু এরাবিডোপসিস উদ্ভিদ জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত থাকে, আবার অন্যগুলো থাকে না। যেগুলো থাকে, সেগুলো প্রতিটি কোষের মধ্যে তাদের সকল ক্রোমোজমের ডজনকে ডজন কপি সঞ্চিত করে রাখে। নতুন এক গবেষণায় স্কলেস এরাবিডোপসিস উদ্ভিদের মধ্যে যেগুলোর নিজেদের জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ক্ষমতা আছে এবং যেগুলোর তা নেই এই উভয় শ্রেণীর মধ্যে সঙ্কর প্রজনন ঘটায়। স্কলেস বলেন, ডিএনএর প্রতিরূপ সৃষ্টি এবং উদ্ভিদের পুনর্জন্মের মধ্যকার সম্পর্কটা যদি কাকতালীয় ব্যাপার হয়ে থাকত, তাহলে উভয়ের মধ্যকার সংস্রবটা তাদের বংশধরদের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যেত। কিন্তু দেখা গেল যে, এই সম্পর্কটা বংশধরদের মধ্যেও বিরাজ করছে। অর্থাৎ, দুটো বৈশিষ্ট্য যে একে অপরকে প্রভাবিত করছে, এটা তার প্রথম প্রমাণ।
অনুমাননির্ভর এই ধারণাটি আরও পরীক্ষা করে দেখার জন্য স্কলেস পরীক্ষামূলকভাবে একটি এরাবিডোপসিস উদ্ভিদের জেনোম প্রতিরূপ তৈরির ক্ষমতা বাড়িয়ে দেন। তার জন্য তিনি সেটাকে এমন এক শ্রেণী থেকে বেছে নেন, যার জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ক্ষমতা নেই এবং চারণ হবার পর যার উর্বরতা বড় ধরনের হ্রাস পেয়েছে। তিনি যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলেন ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল। দেখা গেল, রূপান্তরিত উদ্ভিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর আবার বলিষ্ঠভাবে ফিরে এসেছে বা জোরেশোরে পুনরুৎপাদিত হয়েছে। স্কলেস বলেন, জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ফলে কোষগুলোর আকার বড় হয়ে যায় এবং একেকটি জিনের অনেকগুলো কপি ধারণ করার ক্ষমতা জন্মে। এতে করে কোষের বৃদ্ধির পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও অন্যান্য মলিকুলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফি
এই গবেষণার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দেখা গেছে যে, কাটছাঁট হবার পরও একটা উদ্ভিদের নাটকীয়ভাবে ফিরে আসার ক্ষমতাটা একটা প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে, যাকে বলে জেনোম ডুপ্লিকেশন বা জিনের প্রতিরূপ সৃষ্টি। এক্ষেত্রে এক একটি কোষ তার মধ্যকার জিনেটিক উপাদানের সবগুলোর একাধিক প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে।
জেনোমের প্রতরিূপ সৃষ্টি বিজ্ঞানের কাছে নতুন কিছু নয়। গবেষকরা বেশ কয়েক দশক ধরে এই ব্যাপারটি জেনে এসেছেন। তবে ঠিক কী উদ্দেশ্যে এই প্রতিরূপ সৃষ্টি করা হয়, তা নিয়ে খুব সামান্য ক’জনই মাথা ঘামিয়েছেন। আলোচ্য গবেষণাটি যিনি পরিচালনা করেছেন, তিনি ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক কেন পেইজ। তিনি বলেছেন, বেশিরভাগ লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদÑ আরও সুনির্দিষ্টভাবে বললে এ জাতীয় ৯০ ভাগ উদ্ভিদ তাদের জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টি করে। কেন করে, তা নিয়ে ২০১১ সালে এক গবেষণায় পেইজ ও তার সহযোগী গবেষক ড্যানিয়েল স্কলেস দেখিয়েছেন যে, যেসব উদ্ভিদ দেদারসে জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টি করে চলে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর আবার সবলদেহে ফিরে আসে। গবেষকদের ধারণা, জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উদ্ভিদরা সেই শক্তি লাভ করে থাকে, যা তাদের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন।
গবেষণায় এরাবিডোপসিস থালিয়ানা নামে সরিষা পরিবারের একটি উদ্ভিদের ওপর দৃষ্টি নিবন্ধ করা হয়। দেখা যায়, কিছু কিছু এরাবিডোপসিস উদ্ভিদ জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির কাজে নিয়োজিত থাকে, আবার অন্যগুলো থাকে না। যেগুলো থাকে, সেগুলো প্রতিটি কোষের মধ্যে তাদের সকল ক্রোমোজমের ডজনকে ডজন কপি সঞ্চিত করে রাখে। নতুন এক গবেষণায় স্কলেস এরাবিডোপসিস উদ্ভিদের মধ্যে যেগুলোর নিজেদের জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ক্ষমতা আছে এবং যেগুলোর তা নেই এই উভয় শ্রেণীর মধ্যে সঙ্কর প্রজনন ঘটায়। স্কলেস বলেন, ডিএনএর প্রতিরূপ সৃষ্টি এবং উদ্ভিদের পুনর্জন্মের মধ্যকার সম্পর্কটা যদি কাকতালীয় ব্যাপার হয়ে থাকত, তাহলে উভয়ের মধ্যকার সংস্রবটা তাদের বংশধরদের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যেত। কিন্তু দেখা গেল যে, এই সম্পর্কটা বংশধরদের মধ্যেও বিরাজ করছে। অর্থাৎ, দুটো বৈশিষ্ট্য যে একে অপরকে প্রভাবিত করছে, এটা তার প্রথম প্রমাণ।
অনুমাননির্ভর এই ধারণাটি আরও পরীক্ষা করে দেখার জন্য স্কলেস পরীক্ষামূলকভাবে একটি এরাবিডোপসিস উদ্ভিদের জেনোম প্রতিরূপ তৈরির ক্ষমতা বাড়িয়ে দেন। তার জন্য তিনি সেটাকে এমন এক শ্রেণী থেকে বেছে নেন, যার জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ক্ষমতা নেই এবং চারণ হবার পর যার উর্বরতা বড় ধরনের হ্রাস পেয়েছে। তিনি যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলেন ঠিক তেমনটাই ঘটেছিল। দেখা গেল, রূপান্তরিত উদ্ভিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হবার পর আবার বলিষ্ঠভাবে ফিরে এসেছে বা জোরেশোরে পুনরুৎপাদিত হয়েছে। স্কলেস বলেন, জেনোমের প্রতিরূপ সৃষ্টির ফলে কোষগুলোর আকার বড় হয়ে যায় এবং একেকটি জিনের অনেকগুলো কপি ধারণ করার ক্ষমতা জন্মে। এতে করে কোষের বৃদ্ধির পেছনে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করা গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন ও অন্যান্য মলিকুলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফি