জাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি : ৬ মে : শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকারের কমপক্ষে সাত কর্মদিবস আগে প্রার্থীকে লিখিত চিঠি দিয়ে জানানোর নিয়ম থাকলেও সেটি অনুপস্থিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)। তিন দিন আগে তড়িঘড়ি করে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে সাক্ষাৎকার তারিখ জানানোর অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্যই নিয়মবহির্ভূত এ কাজ করা হয়েছে।

গত ১২ মার্চ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে স্থায়ী সহযোগী অধ্যাপক পদে একজন, স্থায়ী প্রভাষক পদে দুজন এবং অস্থায়ী প্রভাষক পদে তিনজনকে নিয়োগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ সময় এক প্রভাবশালী শিক্ষকের মেয়ে ও এক শিক্ষকের স্ত্রীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য গোপনে পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠে বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ২১ মার্চ বিভাগের একাডেমিক কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় (বর্তমান সভাপতি দেশের বাইরে থাকায়) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ৯ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে দুপুরে তারা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে দেখা করে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করার অনুরোধ জানান। ২৮ মার্চ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পুনরায় প্রকাশ করার জন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।

এ দিকে শিক্ষকদের চাপের মুখে স্থগিতকৃত জাবির কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে ‘অপ্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগের’ এই প্রক্রিয়া  গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই শুরু করা হয় বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়। সাক্ষাৎকারের জন্য লিখিত চিঠে দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের জানানোর নিয়ম থাকলেও গত ৪ মে, বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠানোর মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। খুদেবার্তা প্রেরণকারী বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, ‘উপরের নির্দেশে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষক হওয়ার জন্য যারা আবেদন করেছে তাদের মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে জানানো হয়েছে যে, আগামী ৮ মে বেলা ১টার সময় প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ’ মৌখিক পরীক্ষা বিষয়ে প্রার্থীদের জানানোর মাধ্যম বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম কি জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেন, ‘সময়ের অভাবে চিঠি পাঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে পরবর্তী সোমবারের মধ্যে দুই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক ছুটির দিন।
এত কম সময়ে প্রার্থীরা চিঠি নাও পেতে পারে। তাই মোবাইলে খুদেবার্তা পাঠানো হয়েছে। ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-১) মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘লিখিত কোনো নিয়ম না থাকলেও কমপক্ষে এক সপ্তাহ আগে চিঠি পাঠাতে হবে। আধুনিক যুগ হওয়ায় সময় কম থাকলে মোবাইলের মাধ্যমে জানাতে পারে। যাতে কোনো প্রার্থী অভিযোগ তুলতে না পারে যে আমি বিষয়টি জানি না। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষার একদিন আগে হোক পরে হোক চিঠি দিতেই হবে। ’ এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. মোসত্মাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা উপাচার্যের এই আচরণে হতাশ। উপাচার্যের এই হঠাৎ সিদ্ধান্ত তাহলে কি প্রমাণ করে?’ এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।