জেলা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ,১০ জুন ২০২২:
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মাসুদ রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি জরুরি সভা ডেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
এ সময় শিক্ষক মাসুদ রানাকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেয় ম্যানেজিং কমিটি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজেন্দ্রনাথ সরকার ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (৮ জুন) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অডিও ক্লিপটি ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া ছয় মিনিটের অডিওতে শিক্ষক মাসুদ রানা কর্তৃক পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিতে শোনা যায়। ওই ছাত্রী বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলেও তিনি বারবার একই কথা বলছিলেন। পরে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, শিক্ষক মাসুদ রানা এর আগেও নানা সময়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এর আগেও শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটিতে অভিযোগ জানানো হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুদ রানা অডিও ক্লিপটি তার বলে এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি ভুল করে ফেলেছি। শিক্ষক হয়ে এমন গর্হিত কাজ করা ঠিক হয়নি। বিষয়টিকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন তিনি।
পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ঘটনার পর দুপুরে জরুরি সভার তলব করা হয়েছে। এ সময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত শিক্ষকের উপস্থিতিতে সভা সম্পন্ন করেছেন। সেখানে উপস্থিত সকলেই ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সেই অডিওটি শুনেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক নিজেও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাবদিহি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাসুদ রানা তার লিখিত জবাব দিলে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগের জমা দেওয়া হবে। যেহেতু তিনি একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষক, তাই তাকে চাইলেই ম্যানেজিং কমিটি স্থায়ীভাবে বরখাস্তের করতে পারে না। এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ম্যানেজিং কমিটির নেই। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে বরখাস্তের জন্য সুপারিশ করা হবে।