গ্রেডিং পদ্ধতি হচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক,১১ জুলাই:

পাবলিক পরীক্ষার ফল তৈরিতে বিদ্যমান গ্রেডিং পদ্ধতি সংস্কার চলতি বছর হচ্ছে না। কবে হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। তবে, সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপনের পর বিভিন্ন বিকল্প প্রস্তাব আলোচনা করতে গিয়ে জিপিএর (গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ) পরিবর্তে শুধু ‘জিপি’-তে (গ্রেড পয়েন্ট) ফল তৈরির প্রস্তাবও এসেছে। আবার, বিদ্যমান ব্যবস্থা বহালের প্রস্তাবও আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা নীতিনির্ধারক ঠিক করবেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।


বিদেশি কারিকুলামে (ইংরেজি মাধ্যম) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ফল জিপি পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। এ ছাড়া দেশে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বুয়েটসহ বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বিষয়ভিত্তিক জিপি মূল্যায়িত হয়।

বিদেশেও ভর্তির ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত জিপি মূল্যায়ন করা হয়। এসব কারণে সংস্কার আনার ক্ষেত্রে এখন জিপিএর পাশাপাশি ‘জিপি’ও আলোচনায় এসেছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, সনাতনী পদ্ধতি বাতিল করে ২০০১ সালে জিপিএ চালু করা হয়। ইতিমধ্যে ১৮ বছর চলে যাওয়ায় এ পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়টি সময়ের দাবি। কিন্তু আমরা হুট করে বা একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন কিছু চাপিয়ে দেব না। এ জন্য শিক্ষক, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, অভিভাবক এবং সাংবাদিকসহ অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। সেটি শেষ করে পদ্ধতিটি চালু করা হবে। আমরা এখন সেই সময়টা নিচ্ছি। পাশাপাশি এর প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে।

১০ জুন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভায় গ্রেডিং পদ্ধতির সংস্কার প্রস্তাব তোলা হয়। এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এতে পাবলিক পরীক্ষায় বিদ্যমান শিক্ষার্থীর ফলের সর্বোচ্চ ধাপ (স্কেল) জিপিএ-৫-এর জিপিএ-৪ করার প্রস্তাব করা হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব জানান, এ সভা থেকে প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি পরিবর্তনের আগে অধিক পর্যালোচনার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো এড়িয়ে প্রমাণ ও উপাত্তের ওপর নির্ভর করারও পরামর্শ দেন তিনি। এরপর এ পদ্ধতি সংস্কারের উদ্যোক্তারা গতি কমিয়ে দেন।

অন্যদিকে কতিপয় গণমাধ্যমে বিকৃতভাবে বিষয়টি উপস্থাপিত হওয়ায় এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যেও ভুল বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া জামাতপন্থী কতিপয় অভিভাবক এ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারও করছে। উদ্বিগ্ন অনেকে এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমন পরিস্থিতিতে এ পদ্ধতি সংস্কারের আগে আরও বেশি পর্যালোচনার ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে পরামর্শ দেয়া হয়। এ কারণে আসন্ন জেএসসিতে বাস্তবায়নের কথা থাকলেও সেই চিন্তা থেকে সরে আসা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সরকারের পরীক্ষা সংস্কার ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সংস্কার প্রস্তাব আসার পর বিভিন্ন মডেল তৈরির কাজ চলছে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চর্চা, বিভিন্ন দৃষ্টান্ত এবং শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা, পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই চলছে। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। কেননা প্রমাণ ও উপাত্তের জন্য ট্রাইআউট (পদ্ধতির পরীক্ষা) ও পাইলটিং (পরীক্ষামূলক প্রবর্তন) দরকার।

Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।