করোনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সহায়তা চায় কিন্ডারগার্টেন মালিকরা

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক | ১১ মে, ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সহায়তা দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে কিন্ডারগার্টেনের মালিকারা। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদ (বিকসকপ) এর ব্যানারে সোমবার (১১ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে পরিষদের নেতারা দাবি তুলে ধরেন।

নেতারা দাবি করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শিক্ষাখাতে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করায় বিনা মূল্যে বোর্ড বই ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্ডারগার্টেন নিবন্ধন বিধিমালা-২০১১ এর আলোকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সংশোধিত নিবন্ধন বিধিমালা-২০১২ এর অধীনে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো ফলাফল করায় সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান মোজাহিদ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মো. সাফায়েত হোসেন, কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সচিব জান্নাতুল ফেরদৌস ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফুন নাহার।

নেতাদের দাবি, ‘সরকার ঘোষিত টাস্কফোর্সের পরিসংখ্যানমতে বর্তমানে দেশে প্রায় ৬০ হাজারের বেশি কিন্ডারগার্টেন তথা ব্যক্তিমালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাতে কর্মরত ও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে প্রায় ২০ লাখের অধিক মানুষের, সে সাথে রয়েছে তাদের পরিবারবর্গ। এই ক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার প্রসারেই শুধু ভূমিকা রাখেনি, দেশের বেকারত্ব নিরসনেও এক বিশাল অবদান রেখেছে। বর্তমানে বিশ্ব মহামারি করোনা দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গত ১৬ মার্চ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করায় আমরাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যথার্থ সিদ্ধান্ত ও নিদের্শনাকে শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করে কোনো প্রকার প্রস্তুতি ছাড়াই সাথে সাথে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করি, যা অদ্যাবধি বন্ধ রয়েছে।’

নেতারা আরও বলেন, ‘আমারদের এই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের মাসিক টিউশন ফি’র ওপর নির্ভরশীল এবং ৯৯ শতাংশ ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত। শিক্ষার্থীদের মাসিক টিউশন ফি’র ৪০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ৪০ শতাংশ শিক্ষক শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, বাকি ২০ শতাংশ গ্যাস বিল, বাণিজ্যিক হারে বিদ্যুৎ ও পানির বিলসহ অন্যান্য খরচ নির্বাহ না হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠানে ভর্তুকি দিতে হয়। এমতাবস্থায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায় না হওয়ায় মার্চ মাস থেকে এই পর্যন্ত আমরা সকল প্রকার বিলসহ বাড়ি ভাড়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবদের বেতন পরিশোধ করতে পারিনি বিধায় বাড়ির মালিক বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও গরীব কর্মচারীরা অর্থকষ্টে মানবেতর জীনবযাপন করছেন। ফলে এইসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জীবিকা নির্বাহের আরেকটি উৎস প্রাইভেট টিউশনিও বন্ধ।’ এ অবস্থায় শেষ আশ্রয়স্থল মানবতার মা হিসেবে মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানবিক সহায়তার আবেদন জানাই।

নেতারা জানান, শিক্ষক সমাজ বিভিন্ন সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেক বেশি সম্মান পেয়েছেন। শিক্ষকরা সামাজিক মর্যাদার কারণে কারো কাছে হাত পাততে পারেন না, লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণও গ্রহণ করতে পারছেন না। ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা ও মহানুভবতায় অনেক সেক্টরকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রনোদনা এবং অনুদান দিয়েছেন। ফলে শিক্ষাক্ষেত্রের বিশাল সেক্টরটিকে টিকিয়ে রাখতে এবং অসহায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও গরীব কর্মচারীদের জন্য জীবন বাঁচানো এবং এ প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট যে কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রার্থনা করেন তারা।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে কিন্ডারগার্টেন মালিকদের আরেকটি সংগঠন একই জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫০০ কোটি টাকা অনুদান চেয়েছেন।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinby feather
Image Not Found

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।