চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৪২ লাখের অধিক শিক্ষার্থীর বার্ষিক মূল্যায়নের ফল আটকে আছে। গত ৩০ নভেম্বর মূল্যায়ন কাজ শেষ হলেও এখনো এ দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করতে পারেনি স্কুলগুলো। শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের তথ্য সংরক্ষণ ও ট্রান্সক্রিপ্ট-রিপোর্ট কার্ড প্রস্তুতের অ্যাপ নৈপূণ্যে তথ্য অন্তর্ভুক্তিতে জটিলতায় ষষ্ঠ শ্রেণির সাড়ে ২০ লাখ ও সপ্তম শ্রেণির সাড়ে ২১ লাখ শিক্ষার্থীর ফল দেয়া যায়নি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, এই জটিলতা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সার্ভারে যাতে চাপ কম পড়ে সেজন্য মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রি ও ট্রান্সক্রিপ্ট-রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোডের সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ফল প্রকাশ শুরু হতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার মূল্যায়নের রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড করতে সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা ও তথ্য এন্ট্রিতে দুপুর একটা থেকে সারারাত সময় দেয়া হলেও এতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। গতকাল শনিবার অধিদপ্তর জানিয়েছে, সকাল নয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত শিক্ষকরা রিপোর্ট কার্ড, বিষয়ভিত্তিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও আচরণিক ট্রান্সক্রিপ্ট ডাউনলোড করতে পারবেন। রাত আটটার পর থেকে শিক্ষকরা মূল্যায়নের তথ্য এন্ট্রি করতে পারবেন। তবে রাত আটটার পর রিপোর্ট কার্ড, বিষয়ভিত্তিক ট্রান্সক্রিপ্ট ও আচরণিক ট্রান্সক্রিপ্ট ডাউনলোড বন্ধ থাকবে। শিক্ষার্থীদের রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড করার আগে অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সব তথ্য দিতে হবে। প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকের সব তথ্য সংশোধনের সুযোগ চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংশোধন করে হালনাগাদ করতে হবে। তাহলে রিপোর্ট কার্ডে সব তথ্য সঠিকভাবে দেখতে পারবেন।
শিক্ষকরা বলছেন, গত ১ ডিসেম্বর থেকে তথ্য এন্ট্রি শুরু হলেও কাজ সব কাজ শেষ হয়নি। নৈপূণ্য অ্যাপের সার্ভার সিস্টেমে প্রবেশ করলে বলা হচ্ছিলো, সব প্রসেস ব্যস্ত। কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করতে বলা হয়। আবার তথ্য এন্ট্রি করলেও তা হারিয়ে যাচ্ছিলো। তাই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক মূল্যায়নের ফল প্রকাশ করা যায়নি।
শিক্ষকরা আরো বলছেন, অনেকেই অ্যাপ ঠিকমত ব্যবহার করতে পারছেন না। বিশেষ করে মফস্বলের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণে শিক্ষকদের এই অ্যাপ ব্যবহার ও তথ্য এন্ট্রি নিয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হলে আগামীতে জটিলতা হয়তো কম হবে।
রাজধানীর একটি খ্যাতনামা স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক বলেন, মূল্যায়নের অ্যাপ জটিলতা কমাতে তথ্য অন্তর্ভুক্তি ও রিপোর্ট কার্ড ডাউনলোড ও তথ্য অন্তর্ভুক্তির সময় আলাদা করে দেয়া হয়েছে। সেভাবে আমরা তথ্য অন্তর্ভুক্তি ইতোমধ্যে শুরু করেছি। আশা করছি ২৮ তারিখ ফল প্রকাশ করতে পারবো।
অপর এক প্রধান শিক্ষক বলেন, তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা যাচ্ছে। বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রিষ্ট ধর্মসহ কয়েকটি বিষয়ে বিষয়-শিক্ষক নৈপূণ্য অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা বাকি আছে। এ কাজগুলো শেষ হলে ফল প্রকাশ করা যাবে।