ডেস্ক,২৮ এপ্রিল: অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার স্তর উন্নীত করার কাজ শেষ হবে ২০২১ সালে। এর আগে ২০১৯ সালে ষষ্ঠ শ্রেণীতে এই স্তর উন্নয়ন শুরু হবে। পরের বছর এটি সপ্তম শ্রেণীতে উন্নীত করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে ২০১৮ সালের মধ্যে এই স্তর উন্নয়নের কাজ শেষ করার নির্দেশনা আছে।
এ লক্ষ্যে বিস্তারিত রোডম্যাপ তৈরির কাজ চলছে। বুধবার এমনই একটি সভা ওই মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অষ্টমে প্রাথমিক স্তর উন্নীত করতে ৫টি কর্মপরিকল্পনা ঠিক করা হয়। এগুলো হচ্ছে স্কুল ম্যাপিং, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর যোগ্যতাভিত্তিক কারিকুলাম তৈরি, যেসব স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস চালু করা হবে সেগুলোর অবকাঠামো নির্মাণ, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানে সক্ষম যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ এবং স্কুল ব্যবস্থাপনা নির্ধারণ। বুধবার ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব গিয়াসউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক স্তর উন্নয়ন একটি মৌলিক কাজ। শিক্ষায় নতুন স্তর বিন্যাসের সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত। সেগুলোর জন্য শিক্ষানীতিতেই অনেক ব্যয়ের কথা আছে। আমরা আপাতত তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিডিইপি-৩) অধীনে কাজ শুরু করব। পরে পিইডিপি-৪ এর অধীনে কাজ শেষ করা হবে।
জানা গেছে, কাজ বাস্তবায়নে সারা দেশে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) মাধ্যমে স্কুল ম্যাপিং করা হবে। এর মাধ্যমে কোথায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল বা মাদ্রাসা আছে তা শনাক্ত করা হবে। আগামী ২ বছরের মধ্যে স্কুল ম্যাপিং শেষ হবে। এজন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে। চলতি অর্থবছরে ৫ কোটি এবং পরবর্তী অর্থবছরে পরবর্তী ৫ কোটি টাকা প্রদান করা হবে ব্যানবেইসকে।
প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণীতে পর্যন্ত বর্তমানে যোগ্যতাভিত্তিক কারিকুলাম আছে। ষষ্ঠ থেকে পরবর্তী স্তরে শিখনমূলক কারিকুলামে পড়ানো হয়। তাই অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক উন্নীত করা হলে যোগ্যতাভিত্তিক কারিকুলাম দরকার। তাই বিদ্যমান কারিকুলামে সংশোধন ও পরিবর্তনে কমিটি করা হবে। এবারের এই কাজ প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ই করতে চায়। দেশে বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে ৮০৭টি প্রাথমিক স্কুলে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস চালু আছে। স্কুল ম্যাপিংয়ে যদি আরও কোনো স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস চালু করতে হয়, তাহলে সেগুলোর অবকাঠামো বা ক্লাসরুম নির্মাণ করা হবে। এজন্য বাজেট প্রণয়ন করা হবে।
এদিকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের উপযোগী শিক্ষকের অভাব বর্তমানে প্রাথমিক স্কুলে আছে বলে সূত্র জানিয়েছে। স্কুলে বর্তমানে উচ্চশিক্ষিত শিক্ষক বাড়ছে। কিন্তু অনেকেই বিসিএসসহ অন্য চাকরির ধান্দায় থাকেন। যে কারণে তাদের অনেকেই পাঠদানে মনোযোগী নন। তাছাড়া অষ্টম শ্রেণীর মতো স্তরের পাঠদানে স্থায়ীভাবে উচ্চশিক্ষিত শিক্ষক দরকার। এজন্য নতুন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালাও করতে হবে। প্রস্তাবিত নীতিমালায় শিক্ষক-শিক্ষার ন্যূনতম ডিপ্লোমা ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করার চিন্তাভাবনা আছে।